গ্যাস্ট্রিক এড়ানোর আদর্শ সাহরি-ইফতার

অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ
2022-04-09 15:44:27
গ্যাস্ট্রিক এড়ানোর আদর্শ সাহরি-ইফতার

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এড়াতে চাইলে সাহরি কিংবা ইফতার— কোনো সময় অতি ভুরিভোজ করা যাবে না

পবিত্র রমজান এবার গ্রীষ্মকালে পড়েছে। গরমে ১৪ থেকে ১৫ ঘণ্টা রোজা থাকতে হচ্ছে। ফলে অনেকের জন্যই রোজা রাখা বেশ কষ্টকর হচ্ছে। বিশেষ করে যারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য আরও কঠিন।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা এড়াতে চাইলে সাহরি কিংবা ইফতার— কোনো সময় অতি ভুরিভোজ করা যাবে না। যেসব খাবার সহজপাচ্য বা আপনি সহজে সব সময় খেয়ে অভ্যস্ত এবং হজম হয়, সাহরি ও ইফতারে সেগুলো রাখতে হবে।

যেসব খাবার আমরা সহজে খেয়ে অভ্যস্ত না যেমন, রোজায় ইফতারিতে সাধারণত পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ জাতীয় খাবারগুলো বেশি খাওয়া হয়। যারা গ্যাস্ট্রিকে ভুগছেন, তাদের এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।

এসব খাবারের বিপরীতে পানি কিংবা বাসায় বানানো বিভিন্ন ধরনের শরবত খেলে ভালো হবে। এগুলো রোজায় অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত। পাশাপাশি খেজুর, বিভিন্ন ধরনের রঙিন ফলমূল ও বাসায় বানানো হালিম খাওয়া যেতে পারে। এগুলো তাৎক্ষণিক শরীরে শক্তির যোগান দেয়। ছোলা-মুড়িও খাওয়া যেতে পারে, সমস্যা হবে না।

সারা দিন রোজা রেখে ইফতারে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং সবজি জাতীয় খাবার খেতে হবে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, কোনো অবস্থাতেই যেন অতি ভুরিভোজ না হয়। সাহরি খাওয়ার পর সারা দিন কিছু খাওয়া হয় না। এজন্য আমরা অনেক সময় ভুরিভোজের চেষ্টা করি। এটা মোটেও ঠিক না। এ ভুরিভোজ পেটের জন্য যেমন ক্ষতিকর, স্বাস্থ্যের জন্যও হানিকর।

হঠাৎ একদিন বেশি খেলে অস্বস্তি লাগবে। অতিরিক্ত ভুরিভোজের ফলে বুক জ্বালাপোড়া করবে, ঢেকুর এবং ঢেকুরের সাথে খাবার বেরিয়ে আসতে পারে। এর মধ্যে বুক জ্বালাপোড়া করা একটি বিরক্তিকর উপসর্গ, এটা যার হয় সে খুবই কষ্ট পায়।

কারও আগে থেকে আলসার, লিভারের রোগ, প্যানক্রিয়াসের জটিলতা, গলব্লাডারের সমস্যা থাকে, অতিরিক্ত ভুরিভোজের ফলে এসব রোগের উপসর্গ বেড়ে যেতে পারে।

অতিরিক্ত ভুরিভোজে শরীরে মেদ জমে ওজন বেড়ে যায়। স্থূলতার ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা শরীরের খুব খারাপ অবস্থা তৈরি করে।

সাহরিতে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাবার খেতে হবে। আমাদের শরীরের জন্য প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেলস প্রয়োজন হয়। এসব উপাদান যেসব খাবারে আছে, সেগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে। পেটে গণ্ডগোল হয় না এমন সব খাবার সাহরিতে খাওয়া যাবে। সাহরির সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এখন গ্রীষ্মকাল হওয়ায় শরীরে পানির চাহিদা ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। এ সময় বেশি পরিমাণে পানি পান করা শরীর জন্য উপকারী।


আরও দেখুন: