মাদকাসক্তের প্রাথমিক লক্ষণগুলো কেমন

অধ্যাপক ডা. মো. ওয়াজিউল আলম চৌধুরী
2021-08-06 16:42:15
মাদকাসক্তের প্রাথমিক লক্ষণগুলো কেমন

পড়া বা কাজে অমনোযোগী হয়ে পড়ে, কারণে-অকারণে মিথ্যা বলে

একটি কিশোর মাদকাসক্ত হলে তার ভেতরে কী ধরনের পরিবর্তন আসে, তা পরিবারের বয়োঃজ্যেষ্ঠদের ধারণা থাকলে সমস্যাটি প্রাথমিক অবস্থায় প্রতিরোধ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার আওতায় আনা যায়।

এজন্য মাদকাসক্তির প্রাথমিক লক্ষণগুলো আমাদের সবার জানা খুব জরুরি। মাদকাসক্তির প্রাথমিক লক্ষণ ব্যক্তির বয়স, লিঙ্গ, মাদকদ্রব্যের ধরন, কতদিন ধরে কী পরিমাণে সেবন করছে, তার ওপর অনেকটা নির্ভর করে। এখানে কমন কতকগুলো লক্ষণ দেয়া হলো—

১. মাদকাসক্ত ব্যক্তির আচরণ ও কথাবার্তায় অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়। যেমন, রূঢ় আচরণ করে, মেজাজ খিটমিটে হয়ে যায়, পড়া বা কাজে অমনোযোগী হয়ে পড়ে, কারণে-অকারণে মিথ্যা বলে, অনিয়মিত ঘুম, যখন-তখন বাইরে যেতে চাওয়া, বেশি রাত করে ঘরে ফেরা, হাতখরচে বেশি বেশি টাকা চাওয়ার লক্ষণ অনেকের মধ্যে দেখা যায়।

২. বিবাহিতদের ক্ষেত্রে দাম্পত্য কলহ বেড়ে যেতে দেখা যায়। অনেক সময় ঘরে মাদকদ্রব্য গ্রহণের উপকরণ যেমন, সিগারেটের প্যাকেট, ট্যাবলেটের স্ট্রিপ, সিরিঞ্জ, দিয়াশলাই ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৩. বেশি আসক্ত হয়ে পড়লে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। যেমন, অনেকে নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করে, হাত-পা কেটে থাকে, অসংলগ্ন আচরণ করে।

৪. দীর্ঘদিন নেশাদ্রব্য গ্রহণের ফলে অনেকের মধ্যে সাইকোসিসের মতো রোগ যেমন, হ্যালুসিনেশন, ডিলিউশন, ভ্রান্ত বিশ্বাস, সন্দেহবাতিক দেখা যায়। অনেকেই নিজেকে সামাজিকভাবে গুটিয়ে নেয় এমনকি বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে যাওয়া থেকে বিরত থাকে।

৫. অনেকেই ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে, অনেকের কাছে থেকে টাকা ধার নিয়ে নেশাদ্রব্য কেনে। যারা মদপান করে তারা প্রায়ই অপ্রকৃতস্ত হয়ে ঘরে ফেরে।

৬. যারা ইনজেকশনের মাধ্যমে নেশাদ্রব্য গ্রহণ করে, তাদের হাত-পায়ে প্রায়ই সুচ ফোটানোর দাগ থাকে। হরহামেশা রাস্তাঘাটে দুর্ঘটনা ঘটানো বা ঘনঘন মারামারিতে জড়িয়ে পড়াও নেশাগ্রস্তের অন্যতম লক্ষণ।

৭. অনেকে মাদকাসক্ত থেকে অসামাজিক বা অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। নিয়মিত নেশাদ্রব্য কেনার টাকা জোগাড় করতে চুরি, ছিনতাই বা অন্যান্য আসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে দেখা যায়।

মোটামুটি এসব ব্যাপার অভিভাবকদের জানা থাকলে ভালো হবে। তাহলে পরিবারের কিশোর সদস্য বা কারও মধ্যে এসব লক্ষণ দেখা গেলে প্রাথমিক অবস্থাতেই তাকে কাউন্সেলিং অথবা চিকিৎসার মাধ্যমে মাদকাসক্তের হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে।


আরও দেখুন: