নবজাতকের কান্না শুনে প্রাণ জুড়িয়ে গেল

ডা. মো. আরিফ হোসেন
2022-06-20 13:00:17
নবজাতকের কান্না শুনে প্রাণ জুড়িয়ে গেল

প্রসূতি ও গর্ভজাত শিশুটির জীবননাশের আশঙ্কা। অঘটন ঘটলে বন্ধ হয়ে যাবে সিজারিয়ান অপারেশন

দ্বীপাঞ্চল মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ১৭ মে থেকে সিজারিয়ান অপারেশন চালু হয়। তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যেই ২৯টি সফল অপারেশন সম্পন্ন হয়।

৮ জুন, বেলা আনুমানিক ২টা। হাসপাতালে রুটিন অপারেশন করছিলাম। আরএমও ও ইউএইচএফপিওর ফোন পেয়ে জানতে পারি, Obstructed labour with foetal distress-  এর রোগীকে জরুরি সিজারিয়ান অপারেশন করতে গিয়ে Ruptured uterus with bladder injury দেখা দেয়।

স্যার, সাহায্য লাগবে, যদি একটু আসতেন। আরএমও’র কণ্ঠে আকুলতা। অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া রোগীকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠাতে হলে সড়কপথে যেতে তিন-চার ঘণ্টা সময় লাগবে। প্রসূতি ও গর্ভজাত শিশুটির জীবননাশের আশঙ্কা। কোনো অঘটন ঘটলে বন্ধ হয়ে যাবে সদ্য চালু হওয়া সিজারিয়ান অপারেশন।

দেরি না করে রওনা হয়ে গেলাম। স্পিডবোট থেকে নেমে ইউএইচএফপিও’র গাড়িতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছে সরাসরি ওটিতে। ওয়াস নিয়ে ব্লাডার সরিয়ে দিয়ে বললাম, আগে বাচ্চা বের করে সিজার শেষ করুন।

ব্লাডার নিয়ে ভাববেন না,  আমি দেখছি। আমার উপস্থিতি ও ভরসা পেয়ে প্রাণ ফিরে পেলেন দুই গাইনিকোলজিস্ট। তারা তাদের কাজ সুচারুভাবে করলেন। নবজাতকের কান্না শুনে প্রাণটা জুড়িয়ে গেল।

ব্লাডার মেরামত করলাম, ওয়াউন্ড বন্ধ করলাম। ইউএইচএফপিও’র সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজ করলাম বিকেল ৫টার পর। স্পিডবোটে কক্সবাজার ফিরে চেম্বারে রোগী দেখায় মনোনিবেশ করলাম।

দুদিন পর রোগী সুস্থ সন্তানসহ বাড়ি পাঠানো হয়। আজ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার ধন্যবাদ জ্ঞাপনপত্র পেয়ে আরেকবার মনটা আনন্দে ভরে গেল। ধন্যবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাহফুজুল হক ও তাঁর নিবেদিত প্রাণ টিমকে।

ফুটনোট: উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অপারেশন চালু রাখতে জেলা পর্যায়ের কনসালটেন্টদের সঙ্গে সুসম্পর্ক ও যোগাযোগ অপরিহার্য।

লেখক : ডা. মো. আরিফ হোসেন
সহকারী অধ্যাপক,  সার্জারি (২৫তম বিসিএস)
কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ


আরও দেখুন: