দেশে বিজ্ঞানসম্মত লকডাউন অনুসরণ হচ্ছে না
আমাদের দেশে লকডাউন বিজ্ঞানসম্মত ভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না।
লকডাউনের কিছু প্রকার ভেদ আছে। কোনো একটা দেশে যখন পূর্ণ লকডাউন থাকবে এবং যদি দেখা যায় যে, সেই দেশে আক্রান্তের সংখ্যা মৃতের সংখ্যা এবং শনাক্তের হার লাগাতার দু’সপ্তাহ ধরে কমে আসছে; মানে সেই দেশের সংক্রমণটা চুড়া থেকে নিচের দিকে নামা শুরু করেছে। তখন লকডাউনটা পর্যায়ক্রমে শিথিল করার বিধান আছে।
বিশ্বে এ বিষয়ে যারা বিশেষজ্ঞ আছে, তাদের ভিতরে মতৈক্য আছে যে, এ সময় কিছুটা শিথিল করা যাবে। কোন জিনিসগুলো আগে শিথিল করতে হবে আর কোন জিনিসগুলো পরে শিথিল করতে হবে? যেগুলোতে জনসমাগম বেশি হয়- যেমন রেস্টুরেন্ট, পেক্ষাগৃহ এগুলোতে একটু পরের দিকে শিথিল করা। আর স্কুলটা একটু আগের দিকে খোলা।
এই ধরনের কতগুলো পর্যায় আছে। যেটা আমেরিকাতেও ফলো করা হয়, আমেরিকার যে সিডিসি, তাদেরও এ বিষয়ে প্রত্যক্ষ পরিকল্পনা আছে। পৃথিবীর উন্নত বা সভ্য দেশগুলোর আছে, তারাও এরকম পরিকল্পনা মাফিক চলে।
সেই হিসেবে আমি বলবো- লকডাউনের বিভিন্ন স্থর আছে। যেমন- কঠোরতম লকডাউন, তার চেয়ে একটু কম কঠোর লকডাউন এবং তার চেয়ে আরও একটু কম লকডাউন। এভাবেই ধাপে ধাপে শিথিল করা হয়।
কিন্তু আমাদের দেশে একটু ব্যতিক্রম হচ্ছে যখন কঠোর করার কথা তখন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয় না। যেমন- আইনি বাধ্যবাধকতাগুলো আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সঠিকভাবে প্রয়োগ করেন না। যার জন্য আপনারা দেখবেন রাস্তায় এখনো অজস্র মানুষ সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান না করে হাঁটাচলা করে। কোনো কোনো জায়গায় বিশেষ করে দোকানের সামনে বা গলির মধ্যে প্রচুর জটলাও সৃষ্টি করে। যেখানে সামাজিক দূরত্ব বলতে কিছুই থাকে না। এখানেও প্রয়োগ করা হয় না।
আবার এমনও দেখা যায় যে, আমাদের সংক্রমণের হার বেড়ে যাচ্ছে তার মধ্যে সরকারিভাবে লকডাউনকে শিথিল করা হচ্ছে। যেমনটা এবার হলো। তার মানে বিজ্ঞানের ভাষায় লকডাউনের যে প্রকারভেদ আছে, আমাদের দেশে সেই প্রকারভেদগুলো বিজ্ঞানসম্মত ভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে না।
এখানে সাধারণ মানুষের জন্য আমি বলবো- চাচা আপন প্রাণ বাঁচা। নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে বাঁচানোর চেষ্টা অবশ্যই করতে হবে। এজন্য তাদের বিনা প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হওয়া যাবে না। যখন প্রয়োজনে বের হবেন, তখন অবশ্যই সঠিকভাবে মাস্ক পরে বের হবেন। সঙ্গে জটলা পরিহার করে চলবেন। এক সঙ্গে কোথাও জড়ো হবেন না। কারো সঙ্গে দেখা করা প্রয়োজন হলে ১ থেকে ২ মিটারের দূরত্ব বজায় রাখবেন।
এই যে স্বাস্থ্যবিধি, এগুলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো প্রয়োগ করুক বা না করুক, আমাদের নিজেদের স্বার্থে এবং নিজেদের বাঁচাতে এগুলো অনুসরণ করে চলতে পারি। আমাদের জোর করে কেউ নিষেধ করতে পারবে না যে, না তুমি মাস্ক পরিধান করবে না। কাজেই স্বাস্থ্যবিধিগুলো আমরা অনুসরণ করতে পারি।