কিটো ডায়েটে হাড়ের প্রবলেম হতে পারে
পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী
বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই হচ্ছে শরীরের আদর্শ ওজন নির্ণয়ের একটি গাণিতিক পদ্ধতি। দেহের ওজন ও উচ্চতার ভিত্তিতে এ পদ্ধতিতে আদর্শ ওজন নির্ণয় করা হয়। উচ্চতা অনুযায়ী কারো ওজন স্বাভাবিক আছে কি না, তা বিএমআইয়ের মানের মাধ্যমে জানা যায়। সম্প্রতি ডক্টর টিভিতে কিটো ডায়েট নিয়ে আলোচনাকালে বিএমআইয়ের সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলেছেন এভারকেয়ার হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন পুষ্টিবিদ সামিনা জামান কাজরি
ডক্টর টিভি: আসলে কিটো ডায়েট কী?
তামান্না চৌধুরী: কিটো ডায়েট মূলত বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ডায়েট। নিউট্রোপেনিক ডায়েট যেটা ক্যান্সারের জন্য ব্যবহার করা হয়, এরেনাল ডায়েট যেটা কিডনি রোগীর জন্য ডিজাইন করা হয়। ঠিক সেরকম কিটো ডায়েট এটা বিজ্ঞানের আবিষ্কার যেটা এপিলেপসি বা খিচুনি ওষুধ দিয়ে কন্ট্রোল করা যায় না। সাময়িক সময়ে জন্য বিশেষ তত্ত্বাবধায়ক টিমের মাধ্যমে একটা ডায়েট দেওয়া হয়।
যাতে ৯০% মোর দ্যান ১:২, ২:৪ অনুপাতে কার্বোহাইড্রেটের ফ্যাট এবং প্রোটিন থাকে। যেখানে কার্বোহাইড্রেট একেবারেই জিরো। আমরা যে কেটো ডায়েট ফর্মুলাতে এপিলেপসির বাচ্চাদের জন্য কিটো ফুড তৈরি করতাম সেখানে কার্বোহাইড্রেট বলতে শুধুমাত্র আমরা গাজর যুক্ত করতাম। এটা সাময়িক সময়ের জন্য দেয়া হয়। বাচ্চাদের খিচুনি যাতে কন্ট্রোল হয়।
কিটোনস তৈরি করতে হয় সাধারণত এই ইমপ্লিমেন্টের দুই থেকে চারদিনের মাথায় আমরা ইউরিনে কিটনসের উপস্থিতি পাই। তখন আমরা বুঝতে পারি শরীরে কিটনস তৈরি হচ্ছে। তখন এটি ব্রেনে গিয়ে কাজ করে এবং ব্রেনকে গ্লুকোজ সাপ্লাই বন্ধ রেখে অলটারনেটিভ পথে কিটোনস দেয়া হয় যাতে বাচ্চার খিচুনি কন্ট্রোল হয়। আসলে এই উদ্দেশ্যে কিটোর আবিষ্কার।
ডক্টর টিভি: শিশুদের একটি স্পেসিফিক ডিজিজ ছাড়া অ্যাডাল্টদের ক্ষেত্রে আর কোন ডিজিজের জন্য কোন কিটো ডায়েট সাজেস্ট করেন?
তামান্না চৌধুরী: না। অ্যাডাল্টের ক্ষেত্র রিসার্চ ঘাঁটলে দেখবেন ভেরি ফিউ রিসার্চ সেখানে আছে। একদম নিউক্লিয়ার ডিস্টার্বেন্সেস থাকে অথবা কোনো প্রেগন্যান্ট হচ্ছে না কোন মা। আইবিএফে আছেন। অথবা ওজন বেশি, আনকন্ট্রোলড ডায়াবেটিস উইথ অবসিটি থাকতে হবে। অর্থাৎ শুধু এই না যে কারো ডায়াবেটিস কন্ট্রোল না হলে তার জন্য কিটো।
কিটো সেট করার ক্ষেত্রে কিছু বৈজ্ঞানিক ক্রাইটেরিয়া রয়েছে। একটি হচ্ছে মোর দ্যান ৩০% বিএমআই থাকতে হবে। আনকনন্ট্রোলড ডায়াবেটিস থাকতে হবে। অথবা দেখতে হবে আপনি কোন সাইকোলজিক্যাল ডিজঅর্ডারে আছেন বা বেবি হচ্ছে না। সেটারও শতকরা একজনকে কোন কারণে বিশেষ টিম দিয়ে ট্রিটমেন্ট দিতে হবে...।
ডক্টর টিভি: বিএমআই কী? সাধারণ বিএমআইতে অ্যালার্মিং ভাবা উচিত?
তামান্না চৌধুরী: যে কোন মানুষ ইন্টারনেটে গিয়ে বিএমআই বের করতে পারবে। বিএমআই- আগে বলা হতো ১৮ থেকে ২৫ নরমাল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন রোগের বিচারে ১৮ থেকে ২২ মধ্যে থাকলে বিএমআইয়ে সেটাকে নরমাল ধরা হয়।
২৫ বা ২৬ হয়ে যায় তাহলে আপনার লাইফস্টাইল চেঞ্জ করলে কার্বোহাইড্রেট কিছুটা কমিয়ে দিয়ে একটু ভালভাবে শাকসবজি, ফ্রুটস খেলে ও হাঁটলে কমানো সম্ভব। খাদ্যের কাজ তো ক্লাস থ্রি ও ফোর বইয়েওতো আছে।
নিয়মিত ঘুমাতে হবে, ব্যালেন্স ডায়েট অনুযায়ী কাজ করতে হবে। দ্বিতীয়ত কার্বোহাইড্রেট ডায়াবেটিসের জন্য কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজন নাই। তিন মাসে সাড়ে ছয় থাকলে ডায়াবেটিস ভালো। ডায়াবেটিস তো রোগ না।
আল্লাহ না করুক ক্যান্সার হলে কী করব- কেমো নিবো না। আমার ক্যান্সার আমি কার্বোহাইড্রেট ছেড়ে থাকলে ভালো হব। ডায়াবেটিসকে সামনে রেখে কখনো কিন্তু লাইফস্টাইল প্রতিষ্ঠিত হয় না।
ডক্টর টিভি: কিটো ডায়েট কি করা যাবে? কতদিন পর্যন্ত করা যেতে পারে?
তামান্না চৌধুরী: কিটো করলে সাময়িক একটা রেজাল্ট পাবেন। আপনি সারাজীবন করতে পারবেন না। ভিটামিন বি প্রবলেমগুলো হয়। ৩০% শক্তি প্রোভাইড করে। হাড়ের প্রবলেম হয়। যার ফ্যামিলিতে রোগ আছে তাদের সমস্যা হতে পারে। ধৈর্য ধরলে অটোমেটিক ওজন কমবে।