Advertisement
Doctor TV

শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫


ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় বাড়ছে দূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকির শঙ্কা

Main Image


মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ এখন তুঙ্গে। এই উত্তেজনার ফলে চলমান সংঘাতে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও এখন পর্যন্ত কোন তেজস্ক্রিয় বিপর্যয়ের প্রমাণ মেলেনি, তবে ভবিষ্যতে পরিস্থিতির অবনতির আশংকা করছেন তারা। সোমবার জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (IAEA) জানায়, তারা এখন পর্যন্ত কোনো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ফলে ক্ষতিকর বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা শনাক্ত করেনি।

 

তবে সম্ভাব্য বিপদের বিষয়ে সতর্ক করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মহাপরিচালক ডা. টেড্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস বলেন, “পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার তাৎক্ষণিক এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব শুধু ইরানেই নয়, পুরো অঞ্চলজুড়ে মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর পড়তে পারে।”

 

যুক্তরাজ্যের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের নাগরিক নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান ড. সাইমন বেনেট বলেন, পারমাণবিক স্থাপনায় প্রতিটি হামলার ঝুঁকি সমান নয়। সবচেয়ে ভয়াবহ হবে যদি সক্রিয় কোনো পারমাণবিক রিয়্যাক্টরে সফল হামলা হয়। এতে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তেজস্ক্রিয় পদার্থ ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা শ্বাস-প্রশ্বাস, খাদ্য কিংবা পানির মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

 

IAEA জানায়, ইরানের বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, যেটি বর্তমানে কার্যক্রমে রয়েছে, সেটি এখন পর্যন্ত হামলার শিকার হয়নি। ইসরায়েল ইতোমধ্যে নাতাঞ্জ, ইসফাহান ও ফোর্ডো—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এসব কেন্দ্রে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ব্যবহৃত সেন্ট্রিফিউজ রয়েছে, যেগুলো বেসামরিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাবনা রাখে।

 

নাতাঞ্জে ভূগর্ভস্থ সেন্ট্রিফিউজ ইউনিটসহ স্থাপনাগুলোর বড় অংশ ধ্বংস হয়েছে। IAEA-এর মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি জানিয়েছেন, সেখানে তেজস্ক্রিয় ও রাসায়নিক পদার্থ ছড়িয়ে পড়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সার, কিডনি, ফুসফুস এবং হাড়ের জটিলতা তৈরি করতে পারে।

 

তবে গ্রোসি আশ্বাস দিয়েছেন, “যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হলে ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।” নাতাঞ্জ এলাকার বাইরের বিকিরণ মাত্রা এখনো স্বাভাবিক রয়েছে বলেও তিনি জানান।


 

আরও পড়ুন