চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ম্যামন টু হাসপাতালকে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণা করলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বুধবার (১১ জুন) উদ্যোগে নগর ভবনে অনুষ্ঠিত নতুন কোভিড সংক্রমণ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভায় এই ঘোষণা দেন তিনি।
মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নতুন করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় আগের মতই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরে থাকতে হবে। অপরিষ্কার হাতে চোখ-মুখ নাক স্পর্শ করা যাবে না। বারবার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু অথবা কাপড় বা বাহু দিয়ে মুখ ঢাকতে হবে।
মাস্ক পরিধানের বিকল্প নেই উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এটি ছোঁয়াচে রোগ। চট্টগ্রামে যে চারজনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে, তাদের একজন ৭৫ বছর, একজন ৫৫ বছর, একজন ৩০ বছর বয়সি এবং আরেকজন যুবক। তারা কেউ বিদেশ থেকে আসেনি। তারা ঢাকার কোনো হাসপাতালে ছিল। সেখান থেকে ক্রস ইনফেকশন হয়ে এখানে এসেছে।
মেয়র বলেন, চারজন যেহেতু শনাক্ত হয়ে গেছে, চট্টগ্রামে অনেকেই চিকিৎসার জন্য ভারতে আছেন, আমরা মনে করছি রোগী আরও আসতে পারে। সেজন্য চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ যেসব স্থলবন্দর দিয়ে তারা আসতে পারেন, সেখানে আইসোলেশনের ব্যাপার আছে। তাই করোনা মোকাবিলায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তিনি জনগণকেও সচেতন থাকার এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবাই মিলে করোনা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে আগের মতো এবারও সফল হতে পারব। গতবারের অভিজ্ঞতা আমাদের প্রস্তুত করেছে। এখন ডাক্তাররাও বেশি অভিজ্ঞ এবং সাহসী। করোনার ক্ষেত্রে সচেতনতা সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একটি সার্ভিস সেন্টার চালুর ঘোষণাও দেন মেয়র, যেখানে নাগরিকরা ফোন করে প্রয়োজনীয় সহায়তা নিতে পারবেন।
মেয়র বলেন, নতুন করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিআইটিআইডি, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়- এই চারটি প্রতিষ্ঠানে আরটিপিসিআর টেস্টের ব্যবস্থা রাখা হবে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে এবং চসিকের ম্যামন টু হাসপাতালে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা যাবে।
মেয়র চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং চসিকের ম্যামন টু হাসপাতালকে করোনার জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে দ্রুত প্রস্তুত করতে এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতির নির্দেশ দেন।
এছাড়া তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গতবার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মাস্ক, ভ্যাকসিন ও মেডিকেল কিট নিয়ে ব্যবসা করেছেন। এবার আমরা আরও কঠোর থাকব। সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেটরাও প্রয়োজন অনুযায়ী অভিযান পরিচালনা করবেন।
সভায় বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. অং সুই প্রু মারমা, চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন, সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আকরাম হোসেন ও চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমাম হোসেন রানা।
সভায় সিভিল সার্জন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিআইটিআইডি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিসহ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন