Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ কিনে খাওয়ার যেসব বিপদ

Main Image

ডোজ ক্যালকুলেশন না করেই অথবা ডিউরেশন ক্যালকুলেশন না করেই নিজে থেকেই ওষুধ খেয়ে থাকি। এর ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে।


একজন ব্যক্তি তার শরীরের রোগের উপসর্গ বুঝে নিকটবর্তী ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে থাকে। যখন কোনো ব্যক্তি অনভিজ্ঞ ফার্মেসি দোকানদারের কাছে তার রোগের উপসর্গ বলে, তখন সেই অনভিজ্ঞ ফার্মেসি দোকানদার ওই ব্যক্তির রোগের উপসর্গ বুঝে তার কাছে ওষুধ বিক্রি করে থাকে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই ওষুধগুলো ব্যথানাশক হয়ে থাকে। এই বেদনানাশক ওষুধ সেবনের ফলে কিডনি ড্যামেজ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।

আবার আমাদের সবারই প্রায় কমবেশি জ্বর হয়ে থাকে। শরীরে জ্বর বিভিন্ন কারণে হয়। শরীরের ভেতরে যখন কোনো ইনফেকশন থাকে, সেই ইনফেকশনের কারণেও জ্বর হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে অনেক রোগীই যখন দেখেন যে দু-তিন দিনেও তার জ্বর ভালো হচ্ছে না, সেক্ষেত্রে তিনি অনেক অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করে থাকেন, যেমন- এজিথ্রোমাইসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন। এসব ওষুধ সেবনের ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে।

অনেক সময় রোগী যখন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন না করেন, তখন সে ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে।

বয়স্করা সাধারণত ডায়াবেটিস, হাইপার টেনশন ইত্যাদি আরও অনেক রোগের ওষুধ আগে থেকেই খেয়ে থাকেন। সুতরাং তাদের ক্ষেত্রে সেলফ ডায়াগনসিস ক্ষতিকর‌। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সেল্ফ ডায়াগনোসিসের ফলে তাদের কিডনি এবং লিভারের পরিপূর্ণ ডেভেলপমেন্ট হয় না।

আমরা যখন সেলফ মেডিকেটেড হয়ে কোনো ওষুধ খাওয়ার ফলে কিছুটা ভালো অনুভব করি, তখন ওই ওষুধের প্রতি আমাদের নির্ভরতা বেড়ে যায়। এর ফলে আমরা যখনই আগের ন্যায় শরীরে কোনো রোগের উপসর্গ বুঝতে পারি, তখন ওষুধের কোনো ডোজ ক্যালকুলেশন না করেই অথবা ডিউরেশন ক্যালকুলেশন না করেই নিজে থেকেই সেই ওষুধ খেয়ে থাকি। এর ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে।

আমাদের দেশে এসিডিটি বা গ্যাসের ওষুধ খাওয়ার প্রচলন অনেক বেশি। কিন্তু এই গ্যাসের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই ক্ষতিকর। কেউ যদি টানা দুই বছর গ্যাসের ওষুধ সেবন করে থাকে, তাহলে সে ক্ষেত্রে তার অস্টিওপোলেসি ডেভলপ করে।

এছাড়া আমাদের দেশের বেশিরভাগ ফার্মেসিগুলোতে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ঘুমের ওষুধ বিক্রি করা হয়। এর ফলে কোনো ব্যক্তির দিনের পর দিন ঘুমের ওষুধ খাওয়ার ফলে ঘুমের ওষুধের প্রতি ডিপেন্ডেন্সি বা নির্ভরতা বেড়ে যায়। এভাবে একসময় তার মনে হয়, ঘুমের ওষুধ ছাড়া তার ঘুম হবে না। এর ফলে ঘুমের ওষুধের প্রতি তার নির্ভরতা অনেক বেড়ে যায়।

এভাবে শেষ সেল্ফ মেডিকেটেড হয়ে ওষুধ খাওয়ার ফলে লিভার এবং কিডনি ফেলিওর ডেভলপ করে। এই অবস্থায় পরবর্তীতে চিকিৎসকদের কাছে গেলে চিকিৎসকদেরও রোগের উপসর্গ অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট করতে অসুবিধা হয়।

অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার

সাবেক চেয়ারম্যান

ফার্মেসি বিভাগের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ডা. মো. সাইফুল্লাহ রাসেল

সহকারী অধ্যাপক

মেডিসিন বিভাগ

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

আরও পড়ুন