Advertisement
Doctor TV

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫


ডায়াবেটিসের কারণে অনেক সময় চোখে রক্তক্ষরণ হয়

Main Image

ফাইল ছবি


গ্লকোমা চোখের একটি মারাত্মক রোগ। বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও এ রোগে আক্রান্ত হয়। তবে সঠিক সময়ে রোগটি নির্ণয় করে চিকিৎসা দিলে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। তাই গ্লকোমা হলে ভয়ের কিছু নেই। বাংলাদেশে এ রোগটির ভালো চিকিৎসা হয়। গ্লকোমা রোগের চিকিৎসা নিয়ে ডক্টর টিভির সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছেন ইস্পাহানী ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটালের গ্লকোমা বিভাগের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ও সহকারী অধ্যাপক ডা. তানিয়া রাহমান ছড়া।  সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফখরুল ইসলাম

ডক্টর টিভি: চোখের এমন কি কি রোগ আছে যেগুলোর জন্য ইনজেকশন নিতে হয়?

ডা. তানিয়া রহমান ছড়া: চোখের কিছু কিছু রোগের জন্য ইনজেকশন নিতে হয়। যেমন ডায়াবেটিসের কারণে অনেক সময় চোখে রক্তক্ষরণ হয়, এর প্রতিকারের জন্য চোখে ইনজেকশন নেয়ার প্রয়োজন হয়। আরও কিছু কিছু রোগ আছে যেগুলোতে হয়তো আমরা চোখে ইনজেকশন দিচ্ছি না, কিন্তু সেগুলোতে হাতের শিরায় ইনজেকশন দেয়া হয়। যেমন গ্লকোমা রোগের ক্ষেত্রে চোখের প্রেসার যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে, তখন দেখা যাচ্ছে আমরা চোখের ড্রপ বা ট্যাবলেট দিয়েও চোখের প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছিনা। সেক্ষেত্রে হয়তো কিছু রোগীকে রক্তের শিরার মাধ্যমে ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা করা লাগতে পারে।

ডক্টর টিভি: চোখের এমন কি কি অপারেশন রয়েছে, যার জন্য পরবর্তীতে চোখে ইনজেকশন নেওয়া লাগে?

ডা. তানিয়া রহমান ছড়া: সাধারণত ছানি অপারেশনের সময় কোন ইনজেকশন দেয়া লাগে না। সেক্ষেত্রে ট্রপিক্যাল ড্রপ বা জেলের মাধ্যমে অপারেশন করা হয়। তবে অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে যেমন গ্লকোমা সার্জারির ক্ষেত্রে ইনজেকশন দিয়ে অপারেশন করতে হয়। তারপর রেটিনার অপারেশনগুলো ইনজেকশন দিয়ে করতে হয়।

ডক্টর টিভি: গ্লকোমা রোগীদের ড্রপ ব্যবহারের পদ্ধতি কি?

ডা. তানিয়া রাহমান ছড়া: ড্রপ ব্যবহার করার কিছু নিয়ম আছে। চারটা পর্যন্ত ড্রপ  ব্যবহার করতে হয়। এক্ষেত্রে সময়টা মেইনটেইন করতে হবে। আপনি একটা ড্রপ নেয়ার ৫ মিনিট পর আরেকটি ড্রপ নিতে পারবেন। ড্রপ দেয়ার আরেকটি নিয়ম হল, আপনি চোখে ড্রপ দেওয়ার পর নাক চেপে ধরে ২ মিনিট শুয়ে থাকবেন। নাক চেপে ধরে রাখবেন যাতে নাক দিয়ে গলায় এই ড্রপের পানিটা চলে না যায়। এই নিয়ম ফলো করে ৫ মিনিট পরপর ড্রপ দিতে হবে, যে কয়টা ড্রপ চিকিৎসক দিতে বলেছেন।

ডক্টর টিভি: যারা গ্লকোমা রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন, তাদের কোন কোন বিষয়ে সর্তকতা মেনে চলা উচিত?

ডা. তানিয়া রহমান ছড়া: এক্ষেত্রে আমরা রোগীদের ফলোআপে রেখে তাদের চোখের প্রেসার, চোখের নার্ভের অবস্থাটা দেখে তাদের চিকিৎসা দিয়ে থাকি। তার চোখে ছানি পড়ে যাচ্ছে কিনা, সেটা দেখে সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, আমরা তাদের ওষুধ দিয়ে থাকি। তাদেরকে নিয়ম অনুযায়ী ওষুধ সেবন করার নির্দেশনা দিয়ে থাকি। তাদেরকে ফলোআপে থাকার নির্দেশনা দিয়ে থাকি। গ্লকোমার চিকিৎসা সাধারণত চলমান প্রক্রিয়া। এটাকে সময়মতো চিকিৎসা করাতে হবে। গ্লকোমায় নার্ভ নষ্ট হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে অথবা অপারেশনের মাধ্যমে নষ্টের পরিমাণটা কমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়। তাই রোগীর নিজের এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া খুবই প্রয়োজন। রোগীকে নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে, নিয়মিত ডাক্তারের কাছে চেকআপের জন্য আসতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অপারেশনের জন্য বলা হলে, সময়মতো তার জন্য প্রস্তুতি নিবেন। আরেকটি বিষয় বলব, যাদের ডায়াবেটিস এবং হাইপার টেনশন আছে, তারা অবশ্যই এই দুটি নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। মেডিসিন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী, তারা ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশনের চিকিৎসা করাবেন। কারণ এই দুটো জিনিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে  চোখের সমস্যাও বেড়ে যাবে। এর ফলে গ্লকোমা সমস্যাও বেড়ে যাবে।

ডক্টর টিভি: বাচ্চাদের গ্লকোমা রোগ কিভাবে নির্ণয় করা যায়?

ডা. তানিয়া রাহমান ছড়া: বাচ্চাদের ক্ষেত্রে গ্লকোমা হলে তাদের মায়েরা বুঝতে পারেন।  হঠাৎ করেই বাচ্চার দু’টি চোখ বড় হয়ে যায়। আবার অনেক সময় দেখা যায়, একটি চোখ বড় হয়। তখন মা বলেন, আমার বাচ্চার চোখের মনি বড় হয়ে যাচ্ছে, চোখ দিয়ে পানি পড়ছে,বাচ্চা রোদের দিকে তাকাচ্ছে না, মায়ের দিকে তাকাচ্ছে না। এ ধরনের লক্ষণ নিয়ে রোগীরা আমাদের কাছে আসে। যখনই রোগীরা আসেন ডায়াগনোসিস করার জন্য, তখন বাচ্চাকে অজ্ঞান করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। যখন বুঝতে পারি এটি গ্লকোমা, তখন আমরা অনেকগুলো প্যারামিটার আছে, সেগুলো ডায়াগনসিস করে দেখি যে হ্যাঁ এটি গ্লকোমা।

ডক্টর টিভি: গ্লকোমার চিকিৎসা ব্যবস্থা বাংলাদেশে পর্যাপ্ত কিনা?

ডা. তানিয়া রাহমান ছড়া: ডায়াগনোসিস করার পর পর  গ্লকোমা ধরা পড়লে, আমরা এটি অপারেশন করে ফেলি। এটি খুব ছোট একটি অপারেশন। আমাদের দেশে সব সার্জনরাই অপারেশনটি করে থাকেন। তাই দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। দেশে গ্লকোমা পর্যাপ্ত চিকিৎসা রয়েছে।

আরও পড়ুন