বছরে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ৩ হাজার মানুষ
কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত রোগী
দেশে প্রতিবছর তিন হাজার নতুন করে কুষ্ঠ রোগী সনাক্ত হচ্ছে। সংক্রামক হলেও রোগটি ছড়াতে দীর্ঘ সময় নিয়ে থাকে। যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে মাত্র একটি ওষুধ খেলেই এই রোগের জীবানু বিনাশ সম্ভব।
ঢাকা অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত কুষ্ঠ রোগ বিষয়ক স্টেক হোল্ডার্স সভায় বক্তারা এই কথা বলেন। জাপানী দাতব্য প্রতিষ্ঠান সাসাকা ফাউন্ডেশন এর পৃষ্ঠপোষকতা করেন।
জানা যায়, ১৯৯৮ সালে কুষ্ঠ রোগীর সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৯১ জন। এই রোগের কারণে প্রতিবন্ধী হয়েছেন ১২৫২ জন। সর্বশেষ ২০২১ সালে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো ২৮৭২ জন। প্রতিবন্ধী হয়েছেন ১৫৬ জন। এরমধ্যে ক্ষীণ দৃষ্টি ৮ জন, অসচ্ছ কর্ণিয়া দুই জন, ছানি ২ জন, টেরা চোখ ২ জন ও চোখ বন্ধ করতে না পারা আরো দুজন আছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থমন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, কুষ্ঠ প্রাচীন রোগ। পবিত্র গ্রন্থেও এই রোগের উল্লেখ আছে। বিজ্ঞান বলছে এই রোগ থেকে এখন মুক্তি পাওয়া যায়, প্রতিরোধ করা যায়। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে এই রোগ নির্মুল করবে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরাও আশা করি সেই দিন খুব বেশি দূরে নয়, যখন বাংলাদেশ এই রোগ মুক্ত হবে।
এসময় তিনি কুষ্ঠ রোগী খুজে বের করে চিকিৎসার তাগিদ দেন এবং কুষ্ঠ রোগের ওষুধ দেশে উৎপাদনের কথা বলেন।
যে পরিমাণ কুষ্ঠরোগীর কথা বলা হচ্ছে বাস্তবে এ সংখ্যা আরো বেশি বলে জানান, আইইডিসিআর সাবেক বৈজ্ঞানিক প্রধান ডা. বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, মাত্র ৬ মাস চিকিৎসা নিলেই এই রোগী ভাল হয়ে যায়। কিন্তু ডাক্তারের কাছে দেরি করে আসায় অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেন।
স্কিন টু স্কিন ও শ্বাসনালীর মাধ্যমে কুষ্ঠ ছড়ায়। আর এটা ছড়াতে ৫ থেকে ১০ বছর সময়ও লেগে যেতে পারে। যেকারণে কারো শরীরে ছোট্ট দাগ বা ঘাঁ এর মতো হলেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন ডা. বেনজীর আহমেদ।
এছাড়া সচেতনাতার অভাবে সামাজিকভাবে নিগ্রহ হচ্ছে কুষ্ঠ রোগীরা। এটার জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। দেশে তিনটি হাসপাতালে কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসা চলে। যার মধ্যে কোনটিরও অপারেশন থিয়েটার নেই। আর এই রোগের বিষয়ে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাজেট মাত্র ৬০-৭০ লাখ টাকা। যা খুবই কম। এত কম বাজেটে ২০৩০ সালে কুষ্ঠ রোগ নির্মূল সম্ভব নয় বলেও তিনি জানান ডা. বেনজীর আহমেদ।
অনুষ্ঠানের সভাপত্বি করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমবিডিসি) ডা. সাকিল আহম্মদ।