স্বাস্থ্য বাজেট নিয়ে বিশেষজ্ঞদের হতাশা

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2022-06-10 06:58:13
স্বাস্থ্য বাজেট নিয়ে বিশেষজ্ঞদের হতাশা

স্বাস্থ্যখাতে বাজেটে টাকার পরিমাণে যা বেড়েছে, তার বেশিরভাগ অংশই খরচ হয়ে যাবে বেতনভাতা বাবদ

নতুন অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের পরিমাণ টাকার অংকে বাড়লেও মোট বরাদ্দের আনুপাতিক হারে তা না বাড়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। 

তারা বলছেন, স্বাস্থ্য খাতের 'গতানুগতিক' বরাদ্দে বেতন-ভাতা সামলে তেমন কোনো সংস্কারের সুযোগ আর থাকবে না।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার যে বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেছেন, সেখানে স্বাস্থ্য খাতে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

এ হিসাবে স্বাস্থ্য খাত বরাদ্দ পেয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটেও এই হার একই ছিল।

চলতি অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। সংশোধনে তা কিছুটা কমে ৩২ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা হয়। সেই হিসেবে নতুন অর্থবছরে টাকার অংকে বরাদ্দ বেড়েছে ৪ হাজার ১৩২ কোটি টাকা, ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ।

নতুন অর্থবছরের ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দের মধ্যে ৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা আবার রাখা হয়েছে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণের জন্য। অর্থাৎ, স্বাস্থ্য সেবার জন্য থাকছে ২৯ হাজার ২৮১ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ শতাংশেরও কম।

এর ১৩ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা খরচ হবে পরিচালন বাবদে, উন্নয়ন পাবে ১৫ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা।

গত দুই বছর করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে স্বাস্থ্য খাতে জরুরি প্রয়োজনে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও সংক্রমণ কমে আসায় এবার তা অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছে।

কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুষিয়ে নেওয়ার জন্য আগামী অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতের জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ মনে করেন, জরুরি প্রয়োজনে বরাদ্দ রাখা ‘ইতিবাচক’, তবে বাজেটে এবার তেমন কোনো গুণগত পরিবর্তন তিনি দেখছেন না।

অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, “বাজেটে থোক বরাদ্দ রয়েছে, এটা ভালো। যদি কোনো জরুরি পরিস্থিতি আসে, তখন এটা ব্যবহার করা যাবে। এটা রাখার অভ্যাসটা ভালো।"

তবে সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যের বরাদ্দের বিষয়ে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, “বাজেটে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। টাকার পরিমাণে যা বেড়েছে, তার বেশিরভাগ অংশই খরচ হয়ে যাবে বেতনভাতা বাবদ। বড় অংশ চলে যাবে সেখানে। নতুন কিছু করার সুযোগ হবে না এই বাজেট থেকে।”

জনগণের স্বাস্থ্য আন্দোলন-বাংলাদেশের সমন্বয়কারী আমিনুর রসুলের মতে, স্বাস্থ্য খাতের এই বরাদ্দ যথেষ্ট নয়।

“আমরা বাজেট বাড়াতে বলেছিলাম। কিন্তু সেটা আগের মতই থাকল। ফলে এই বাজেটের মাধ্যমে স্বাস্থ্য খাতের প্রত্যাশা পূরণ হবে না।"


আরও দেখুন: