বিএসএমএমইউয়ে আন্তর্জাতিক শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসা দিবস পালিত
শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)-এ বুধবার (১৩ নভেম্বর) ‘আন্তর্জাতিক শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসা দিবস ২০২৪’ পালিত
শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)-এ বুধবার (১৩ নভেম্বর) ‘আন্তর্জাতিক শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসা দিবস ২০২৪’ পালিত হয়েছে। বাংলাদেশ সোসাইটি অফ ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন (বিএসপিএমআর) এবং বিএসএমএমইউ-এর ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানের মূল পর্বগুলি ডা. মিল্টন হলে অনুষ্ঠিত হয় এবং সকাল সাড়ে ৮টায় উদ্বোধনী র্যালির মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটি অফ ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন-এর সভাপতি প্রফেসর ডা. কামরুল ইসলাম। সকাল ৯টায় বৈজ্ঞানিক সেশন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা আলোচনা করেন। এই পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক নাজমুল হুসাইন, ডিরেক্টর জেনারেল, মেডিকেল এডুকেশন ডি জি এইচ এস, ঢাকা। বৈজ্ঞানিক সেশনের সভাপতিত্ব করেন বিএসএমএমইউ-এর ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা সেলের সভাপতি প্রফেসর ডা. এম এ শাকুর।
বৈজ্ঞানিক সেশনে বক্তা হিসেবে প্রফেসর ডা. এম এম জামান "আন্তর্জাতিক চগজ দিবস" বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া ডা. মোঃ রাশেদুল আলম "SCI কেস রিপোর্ট" (স্পাইনাল কর্ড ইনজুরির কেস রিপোর্ট) বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। প্রফেসর ডা. তসলিম উদ্দিন পুনর্বাসন চিকিৎসার ওপর তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
সকাল ১১টায় অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে একটি প্রেস কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ-এর মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ডা. সায়েদুর রহমান এবং কার্যনির্বাহী সভাপতি হিসেবে ছিলেন প্রফেসর ডা. তসলিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে ক্লিনিকাল প্রোগ্রাম, বিশেষজ্ঞের মতামত এবং স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়নের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
এরপর "ছাত্র আন্দোলন পরবর্তী আহতদের পুনর্বাসন" বিষয় নিয়ে বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে কীভাবে আহত রোগীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা সেলের সভাপতি প্রফেসর ডা. এম এ শাকুর।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিএসএমএমইউ-এর বিভিন্ন বিভাগে প্রায় ১৮২ জন আহত রোগীর চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে জরুরী বিভাগে ৫৮ জন রোগী, কেবিনে: ৩৩ জন রোগী, SSH (বহির্বিভাগে) ৫৭ জন রোগী, SSH (অভ্যন্তরীণ বিভাগে) ২৪ জন, ICU তে ১০ জন রোগী। আগত রোগীদের মধ্যে আঘাতের ধরন অনুযায়ী সংখ্যা ছিল গুলিবিদ্ধ ৬৯ জন, শারীরিক আঘাত ৮ জন, ভোঁতা আঘাত ৮ জন, পড়ে যাওয়া ৩.৫ জন, ধারালো কাটা আঘাত ৩.৫ জন, রাসায়নিক আঘাত ৮ জন। ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে মুক্ত আলোচনা পর্ব রাখা হয়েছেভ যেখানে উপস্থিত দর্শক ও অতিথিরা পুনর্বাসন চিকিৎসার বিষয়ে তাদের মতামত ও প্রশ্ন শেয়ার করেন। অনুষ্ঠানের শেষ অংশে হুইলচেয়ার, চিকিৎসা সরঞ্জাম, আর্থিক অনুদান এবং অন্যান্য সহায়ক উপকরণ প্রদান করা হবে, যা শারীরিক প্রতিবন্ধী রোগীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখেন।
এই দিবসের মাধ্যমে শারীরিক পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরা এবং এর আরও উন্নতির জন্য বিভিন্ন গবেষণা ও ক্লিনিকাল অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা হয়, যা রোগীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় নতুন দৃষ্টিভঙ্গি যোগ করে।