সারাদেশের ছাত্রীদের এইচপিভি টিকাদান শুরু
জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান কর্মসূচি চলছে
সারাদেশে ছাত্রীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান কর্মসূচি আজ বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) থেকে শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচি ঢাকা বিভাগ ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), ইউনিসেফ ও দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গ্যাভির সহায়তায় এই টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের লক্ষ্যে মোট ১৮দিন টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর মধ্যে প্রথম ১০দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও ইপিআই স্থায়ী কেন্দ্রসমূহে এ কার্যক্রম চলবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ম-৯ম শ্রেণীর ছাত্রীরা টিকা পাবে। কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকা নিতে অসমর্থ হলে তারা স্থায়ী কেন্দ্রে টিকা নিতে পারবে। এছাড়া স্থায়ী কেন্দ্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহিভূর্ত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীরাও টিকা গ্রহণ করতে পারবে।
পরবর্তী আটদিন নিয়মিত ইপিআই স্থায়ী (যেমন-জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) ও অস্থায়ী (যেমন বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ডের টিকাদান কেন্দ্র) টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে কমিউনিটির ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের টিকা প্রদান করা হবে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাদ পড়া ৫ম-৯ম শ্রেণীর ছাত্রীরাও টিকা নিতে পারবে। শুরুতে এ কার্যক্রম সাতটি বিভাগের নির্দিষ্ট বয়সী ও নির্ধারিত শ্রেণীতে অধ্যয়নরত কিশোরীরা িি.িাধীবঢ়র.মড়া.নফ ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে টিকাকার্ড সংগ্রহ করতে পারবে। পরে ওই কার্ড দেখিয়ে টিকার ডোজ গ্রহণ করা যাবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার জন মৃত্যুবরণ করে থাকেন, যার প্রায় ৯৪ শতাংশই মৃত্যুই বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশে ঘটে থাকে। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮ হাজার ২৬৮ জন নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং তার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
উল্লেখ্য, নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ জরায়ুমুখ ক্যান্সার। নারীরা যেসব ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন সেসবের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার বৈশ্বিক-ভাবে চতুর্থ সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশী নারীদের ক্ষেত্রে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।