দেশে যক্ষ্মা চিকিৎসায় সাফল্যের হার ৯৭ শতাংশ

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2024-10-23 17:38:00
দেশে যক্ষ্মা চিকিৎসায় সাফল্যের হার ৯৭ শতাংশ

রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এ আয়োজিত ‘‘যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে সহযোগীদের মধ্যে কার্যকর অংশীদারত্ব ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান

দেশে যক্ষ্মা চিকিৎসায় সাফল্যের হার ৯৭ শতাংশ। সোমবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে এ আয়োজিত ‘‘যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে সহযোগীদের মধ্যে কার্যকর অংশীদারত্ব ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। তবে উন্নত ও বিনামূল্যে যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা থাকা সত্ত্বেও জনসচেতনতার অভাব ও সামাজিক কুসংস্কারের কারণে ব্যাপক সংখ্যক রোগী শনাক্তের বাইরে থেকে যাচ্ছে বলে অভিমত বক্তাদের। 


অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৯ হাজার ৯১৯ জন। দেশে প্রতি বছর অন্তত প্রতি লাখে ২২১ জন যক্ষ্মায় আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এর মধ্যে তিন হাজার ৩০০ জন ওষুধ প্রতিরোধী (এমডিআর) যক্ষ্মায় আক্রান্ত। এ পরিস্থিতিতে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম জোরদার, জনসচেতনতা সৃষ্টি, সংশ্লিষ্ট সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্টেকহোল্ডারদের সমন্বিতভাবে কাজ করা, দাতা সংস্থাগুলোর অর্থায়ন বাড়ানো, সঠিকভাবে শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, যক্ষ্মা চিকিৎসাকে আরও অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি।  

 

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. আফজালুর রহমান, গ্লোবাল ফান্ডের বিভাগীয় বিশেষজ্ঞ ডা. আহমেদ পারভেজ জাবিন, ব্র্যাকের সহকারী পরিচালক শায়লা ইসলাম প্রমুখ। এতে ব্র্যাক, আইসিডিডিআরবি, পিএইচডি, কেএমএসএস, নাটাব, বিজিএমইএসহ যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে জড়িত সহযোগী সংগঠনের কর্মকর্তাসহ মোট ৪০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।  

 

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন নারী মৈত্রীর স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিভাগের পরিচালক মাসুদা বেগম। যক্ষ্মা বিষয়ক উপস্থাপনা তুলে ধরেন সিএফসিএস রাউন্ড ১২ এর প্রকল্প সমন্বয়কারী তৌহিদা সুলতানা।  

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, যক্ষ্মা বিশ্বের ১০টি প্রধান মরণব্যাধির একটি। বাংলাদেশের জন্য এটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের যে ৩০টি দেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। যক্ষ্মা নির্মূলের মাধ্যমে ১২ লাখ মানুষের জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশ আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান- স্টপ টিবি পার্টনারশিপ এবং অন্যান্য সহযোগীদের সঙ্গে বাংলাদেশ যৌথভাবে কাজ করছে।  

 

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যক্ষ্মা প্রতিরোধে সরকার পাঁচ বছর (২০২১-২০২৫) মেয়াদী জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ করছে। বিশ্বে যত যক্ষ্মা রোগী আছে তার মধ্যে আট দেশেই রয়েছে দুই-তৃতীয়াংশ। এসব দেশ হলো- বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ফিলিপাইন, পাকিস্তান ও নাইজেরিয়া।

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরুল কায়েস বলেন, সরকার যক্ষ্মা নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান 

রাখছে। এইডস, যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়া প্রতিকার এবং প্রতিরোধ করা যায়। এর জন্য দরকার অঙ্গীকার, সংকল্প ও সংহতি। আসুন আমরা সবাই মিলে যক্ষ্মা নির্মূলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই।

 

তিনি আরও বলেন, গত এক দশকে লাখে মৃত্যু কমে দাঁড়িয়েছে ২৭ জনে। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সমাজ থেকে কুসংস্কার দূর করতে হবে যাতে মানুষ বিচ্ছিন্নতার ভয়ে চিকিৎসা নেওয়া বন্ধ না করে।

তিনি ঢাকার বসতি এলাকার মানুষের মধ্যে যক্ষ্মাবিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে কাজ করার জন্য নারী মৈত্রীকে ধন্যবাদ জানান।  

 

শাহীন আক্তার ডলি বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে যক্ষ্মা কীভাবে নির্মূল করা যায়, সে ব্যাপারে আমরা সবাই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আশাবাদী- সরকারের সহযোগিতায় আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে খুব শিগগিরই যক্ষ্মা নির্মূল করতে পারব। আলোচনায় উপস্থিত প্রতিনিধিরা ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।


আরও দেখুন: