ঢামেকে স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন-২০২৪(খসড়া) এর পর্যালোচনামূলক সভা অনুষ্ঠিত
স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন -২০২৪(খসড়া) এর উপর পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদন তৈরির লক্ষ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের রেসিডেন্ট, ট্রেইনি এবং ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন -২০২৪(খসড়া) এর উপর পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদন তৈরির লক্ষ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের রেসিডেন্ট, ট্রেইনি এবং ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৯ অক্টোবর) ইউনাইটেড মেডিকেল অর্গানাইজেশনস্ অব বাংলাদেশ (ইউমব) উদ্যোগে ঢামেকের শহীদ ডা. মিলন অডিটরিয়ামে আয়োজিত সভায় স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন-২০২৪ (খসড়া) এর উপর পর্যালোচনামূলক প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন "ইউমব" এর মুখপাত্র এবং ডক্টরস্ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মোবারক হোসাইন। এ সময় তিনি আইনের খসড়ায় বিদ্যমান অসঙ্গতি ও অস্পষ্টতা এবং অসম্পূর্ণতাগুলো তুলে ধরেন। একইসাথে এগুলোর সমাধান কি হতে পারে, সে বিষয়ে কতিপয় প্রস্তাবিত সমাধানও তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডক্টরস মুভমেন্ট ফর জাস্টিস এর সভাপতি ও "ইউমব"এর সেন্ট্রাল কোলাবোরেশন টিমের সদস্য ডা. জাবির হোসাইন। তিনি আইনটির খসড়াকে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এটি যদি বাস্তবায়ন করা হয় তাহলে সেবা প্রদানকারী হিসেবে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী এবং সেবাগ্রহিতা হিসেবে রোগীপক্ষ সবাই নিগ্রহের শিকার হবে। এটি কারোর জন্যই উপকারী হবে না। এটি অন্য অনেক অকার্যকর আইনের মত একটি আইন হয়ে যাবে। অনেকটা পলিথিন আইনের মত হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, যদি সত্যিই স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষার জন্য আইন প্রণয়নের স্বদিচ্ছা থাকে তাহলে এই আইনটিকে আরো পর্যালোচনা করে গ্রহণযোগ্য একটি আইন প্রস্তুত করে তারপর কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই কাজের জন্য আমাদের চিকিৎসক সমাজের আওয়াজ তুলতে হবে, পর্যায়ক্রমে বিএসএমএমইউ, সলিমুল্লাহ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে আজকের মত সচেতনতামূলক, পর্যালোচনামূলক সভা আয়োজন করতে হবে। এই আইনের খসড়াটি পড়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে হবে। উপযুক্ত আইন প্রণয়নের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে যা করা প্রয়োজন তাই করতে হবে বলে পরামর্শ দেন ডা. জাবির।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ইন্টার্ণ চিকিৎসক সোসাইটি এর প্রেসিডেন্ট এবং "ইউমব" এর নির্বাহী সদস্য ডা. আবরার হামিম বলেন, স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন নিয়ে এভাবে গোছানোভাবে আমাদের সিনিয়র ভাইয়া আপুরা কাজ করে যাচ্ছেন দেখে আমরাও অনুপ্রাণিত হই। এ বিষয়ে সিনিয়রদের যেই আগ্রহ আর উদ্যমী চিন্তা রয়েছে, আমরা সবাই পাশে থাকলে তারা আরো ভালোভাবে এগিয়ে যেতে পারবেন। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতাযর আশ্বাস দেন তিনি।
ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. হিরা বলেন, খসড়া আইনটির অসঙ্গতিগুলো দূর না করলে আমাদেরকেও এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। তাই এই কাজে আমাদের সকলের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ইসলামিক মেডিকেল সোসাইটি (বিমস) এর প্রেসিডেন্ট এবং ইউমব এর নির্বাহী সদস্য ডা. শরীফুল ইসলাম বলেন, আমাদের এক সাথে কাজ করতে হবে। তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। পেশাগত দায়িত্বের পরিধির ব্যাপারে ইসলামের মৌলিক বিধান তুলে ধরে তিনি বলেন, যাদের চিকিৎসা প্রদানের জ্ঞান নেই, ইসলামের দৃষ্টিতে তাদের চিকিৎসা দেওয়া নিষেধ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ঢাকা মেডিকেল কলেজের আরও অনেকে রেসিডেন্ট, ট্রেইনি এবং ইন্টার্ণ চিকিৎসকেরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
ইউমব এর মুখপাত্র ডা. মোবারক হোসাইন স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা আইন-২০২৪ নিয়ে ইউমবের পক্ষ থেকে একটি পর্যালোচনামূলক প্রতিবেদন তৈরি করে, সেটি নিয়ে অন্যান্য সংগঠন যেমন Alliance for health reform of Bangladesh এবং Health Rights এর প্রতিবেদনগুলো একসাথে করে চিকিৎসক জনতার পক্ষ থেকে একটি চূড়ান্ত পর্যালোচনা প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার কথা ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আইনটি যেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী এবং জনতা সবার ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করে সেভাবেই এটিকে প্রস্তুত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। উপস্থিত সবাইকে ব্যক্তিগত অবস্থান থেকে এই বিষয়টি নিয়ে আওয়াজ তুলতে অনুরোধ ডা. মোবারক হোসাইন।