অভ্যুত্থানে শহীদ ৭৩৭, আহত ২৩ হাজার: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2024-10-07 19:14:00
অভ্যুত্থানে শহীদ ৭৩৭, আহত ২৩ হাজার: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

সোমবার (৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৭৩৭ জন শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২৩ হাজারের বেশি মানুষ। সোমবার (৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

 

উপদেষ্টা বলেন, আন্দোলনে ৭৩৭ জন শহীদ হয়েছেন। তবে এটা ভেরিফায়েড না। ছাত্রদের একটা তালিকা আছে। সেখানে বলা হয়েছে নিহত দেড় হাজারের বেশি। ছাত্ররা তাদের তালিকা আমাদের দিলে আমরা ক্রস চেক করে দেখব।

 

তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত যে তথ্য আমাদের কাছে আছে, সেখানে ৭৩৭ জন নিহত হয়েছেন। এগুলো যাচাই করা হয়নি। ছাত্রদের কিছু তথ্য আছে, প্রায় ১ হাজার ৫০০ জনের ওপরে। সেগুলো আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয় করছি। তাদের তালিকা আমাদের দিক। কারণ কোন কোনগুলো ওভারল্যাপ হতে পারে। কাজেই সেগুলো বাদ দিলে আসল তালিকা হবে।

 

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, নিহতদের ক্ষেত্রে বেশ বড় রকমের একটা সমস্যা আমাদের ফেস করতে হয়েছে। কিছু কিছু আছে কেস করেনি, পোস্টমর্টেম হয়নি, সার্টিফিকেট পায়নি। আবার কিছু কিছু আসছে যখন ভর্তি হয়েছে, তখন তাদের সত্যিকারের ঠিকানা লুকিয়েছে। কারণ তারা ভয় পেয়েছেন, যদি ধরা পড়েন তাদের পরিবারের ওপর আক্রমণ চালাবে। কাজেই যখন মারা গেছে, আমাদের কাছে যেই ফলস ঠিকানা ছিল সেটা নিয়েই কাজ শুরু করতে হয়েছে।

 

তিনি বলেন, আহতের সংখ্যা প্রায় ২৩ হাজারের মতো। নানারকম ইনজুরড আছে। চোখের প্রায় ৪০০-এর মতো ইনজুরড। আবার কারো হাত-পা কাটা গেছে। যেগুলো হাসপাতালে ছিল সেগুলো সব আমাদের ভেরিফায়েড করা। কিন্তু প্রথমদিকে ভালো হয়ে গেছে, চলে গেছে তারা আসল ঠিকানা দেয়নি।

 

নূরজাহান বেগম বলেন, গুরুতর আহত হয়েছেন ৭০০-৮০০ জন। তাদের মধ্যে ৪০০ জনের চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে দুই চোখ হারিয়েছেন ৩৫ জন। অঙ্গহানি হয়েছে ২২ জনের। হাত কাটা গেছে ৩ জনের, পা কাটা গেছে ১৯ জনের। এ সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে।

 

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২০০ জনের মতো। এর মধ্যে ক্রিটিক্যাল মুসা। সে খুব ক্রিটিক্যাল রোগী, তাকে আমরা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর নেওয়ার চিন্তা করছি। বাকিদের মধ্যে একজনের স্পাইনাল কর্ড ইনজুরি আছে, তাকেও হয় তো আমাদের বাহিরে পাঠাতে হতে পারে। তবে আমরা চেষ্টা করছি সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি, তাদের সঙ্গে কনসালটেন্ট করে এখানে চিকিৎসা দিচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি। আগে সে হাত নাড়াতে পারতো না, এখন সে হাত নাড়াতে পারছে। আশা করি আমরা ক্রমান্বয়ে তাকে সুস্থ করে তুলতে পারবো। যদি না পারি তাহলে তাকে পাঠাতে হবে।

 

নূরজাহান বেগম বলেন, আগামীকাল দুই মাস পূর্ণ হবে আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। আমরা এতোদিন কি কাজ করলাম। আমরা যখন দায়িত্বে এলাম, তখন আমাদের হাসপাতালগুলোতে রোগীতে ভর্তি। চোখ অন্ধ হয়ে গেছে, এমন ছাত্র-জনতা আছেন। হাত-পা কেটে ফেলতে হয়েছে এমন ছাত্র আছে, জনতা আছে।

 

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করলাম আন্দোলনে আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয়া। আর একটা ছিল কারা নিহত হলো, কারা আহত হলো তাদের তথ্য সংরক্ষণ করা, তৈরি করা। আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিলাম, সেই কমিটিকে কিছু নির্দেশনা দেয়া হলো। যারা আহত হলো বা নিহত হলো তাদের পরিবারকে আমাদের সহায়তা করতে হবে। আমরা একটা নীতিমালা করেও দিলাম।


আরও দেখুন: