বাগেরহাটে ৩ চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে ৩ চিকিৎসককে মারধরের ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন উল্লেখ করে স্বপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। গত ২ অক্টোবর দুপুরে ২০-২৫ জনের একটি দল এ হামলা চালায়।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অভিযোগের বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতে জেলা পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
সংবাদ প্রতিবেদনের বরাতে সুয়োমটোতে উল্লেখ করা হয়, ২ অক্টোবর দুপুরে ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ঢুকে পড়ে। তারা সেখানে কর্মরত উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) চন্দন দাসকে জোর করে বের করে মারধর শুরু করে। তাকে রক্ষায় এগিয়ে যান ডা. তনুশ্রী ডাকুয়া ও ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হামলাকারীরা তাদেরও মারধর করে।
ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা বলেন, শিমুল শেখ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল জরুরি বিভাগে হামলা করে। তারা চন্দন দাসকে বের করে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। তিনি ও ডা. তনুশ্রী ডাকুয়া মারধর ঠেকাতে গেলে হামলাকারীরা তাদেরও মারধর করে।
ওই চিকিৎসকের ভাষ্য, হামলাকারীরা এ সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায়কে গালাগাল করে। শিমুল শেখের সঙ্গে হামলায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালসের শাহীন ও একমি ফার্মাসিউটিক্যালসের রাব্বিকে চিনেছেন। হাসপাতালের ভেতরে এমন হামলার পর থেকে চিকিৎসকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলার বিচার দাবি করেন তিনি।
এই হামলায় দায়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মুফতি কামাল হোসেন। মুফতি কামালের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ওষুধ কোম্পানির কর্মীও রয়েছেন বলে অভিযোগ।
সুয়োমটোতে কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ উল্লেখ করেন, হাসপাতালের মত একটি স্পর্শকাতর স্থানে কর্মরত চিকিৎসকদের প্রহার করা তাদের মর্যাদার ওপর যেমন চরম আঘাত একই সঙ্গে চিকিৎসারত রোগীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থায় থাকার অধিকারের চরম লঙ্ঘন।
এ অবস্থায়, ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে যত দ্রুত সম্ভব আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে আগামী ১২ নভেম্বরের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ এর ১৭ ধারা অনুযায়ী জেলা পুলিশ সুপারকে বলা হয়েছে।