ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত ৬৩১, আহত ১৯ হাজার ২০০ জনের বেশি

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2024-09-09 21:19:00
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত ৬৩১, আহত ১৯ হাজার ২০০ জনের বেশি

সারা দেশে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সারা দেশে সংঘাত-সহিংসতায় কমপক্ষে ৬৩১ জন ছাত্র-জনতা প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৯ হাজার ২০০ জনের বেশি। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ চিত্র তুলে ধরেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।


ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৫০ জনেরও বেশি মানুষকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল এবং এই ২১ দিনের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮১ জন মারা গেছেন।

এ আন্দোলনে হতাহতদের পরিপূর্ণ তালিকা তৈরি করতে গত ১৫ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে। কমিটি বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয়ে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আহতদের মধ্যে ১৬ হাজার জনের বেশি সারা দেশে সরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং অন্তত ৩ হাজার জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব ও কমিটির প্রধান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল থেকে তথ্য সংগ্রহ করা চ্যালেঞ্জিং। কারণ তারা সরকারি হাসপাতালের মতো কঠোরভাবে ডাটা সংরক্ষণ করে না। কিছু ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা ভয়ে হাসপাতালে নাম রেজিস্ট্রি করতে চান না।


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আরও বলেন, এটি একটি খসড়া তালিকা। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এর ডাটা আরও আপডেট করছেন। কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে এ তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। সেখানে আরও বেশকিছু অতিরিক্ত তথ্য সংযুক্ত থাকবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের বেসরকারি ক্লিনিকে যারা চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের বিষয়ে সরকারকে কোনো তথ্য দেয়া হয়নি।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১১ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। চট্টগ্রামে আহতের সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ- ২ হাজার।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে প্রাণহানিও ঘটেছে সর্বোচ্চ। এ বিভাগে নিহত হয়েছেন ৪৭৭ জন। নিহতের সংখ্যা সবচেয়ে কম বরিশালে ১ জন। চট্টগ্রাম ও খুলনায় নিহতের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৩ ও ৩৯ জন। যাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের মধ্যে ৩ হাজার ৪৮ জনের অবস্থা ছিল গুরুতর। তাদের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়েছে। এ ছাড়া কমপক্ষে ৫৩৫ জন তাদের আঘাতের কারণে স্থায়ীভাবে শারীরিক অক্ষম হয়ে পড়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীনে ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) আন্দোলনে আহত ও নিহতদের তালিকা তৈরি করছে।

জানা গেছে, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রকৃত তালিকা করতে ওয়েবসাইট নির্মাণ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে দেশের সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের কাছে শহীদ ও আহতদের তথ্য ইনপুট দেবার সুযোগ রাখা হচ্ছে। এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটি বলেছে, গণহত্যার প্রকৃত চিত্র আড়াল করতে ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই কবর দেয়া হয়েছে। সনদে ‘গুলিতে নিহত হয়নি’ এমন মিথ্যা তথ্য রয়েছে।


আরও দেখুন: