ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসকদের ওপর হামলা, দোষীদের গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। শনিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধায় একদল উচ্ছৃঙ্খল লোক সংঘবদ্ধভাবে নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিনজন চিকিৎসক আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্যথায় কর্মবিরতির হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
এদিকে, ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সেবা সংস্কার পরিষদ।
শনিবার রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী ৪৮ ঘটনার মধ্যে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত নিশ্চিত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা না হলে এবং চিকিৎসকদের সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করা না হলে ইমার্জেন্সি অপারেশন/চিকিৎসা ছাড়া সকল প্রকার অপারেশন এবং সেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হবে।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন চিকিৎসক ডক্টর টিভিকে জানান, গতকাল শুক্রবার রাতে আনুমানিক ১২টা নাগাদ অজ্ঞাতনামা এক যুবক নিউরোসার্জারী ভায়োলেট ইউনিটে দুর্ঘটনাজনিত মারাত্মক ইঞ্জুরি (H/O RTA) নিয়ে ভর্তি হন। রোগীর জিসিএস স্কোর ছিল ৯। রোগীকে শুরুতে ২ জন লোক এসে দিয়ে গেলেও পরবর্তীতে তেমন কেউ ছিলনা। CT Scan of Brain ফ্রি করার ব্যবস্হা করা হয় এবং সে অনুযায়ী রোগীকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। রোগীকে সাথে সাথে অপারেশন করার মত পরিস্থিতি ছিলনা। তাছাড়াও তখন আরও কয়েকটি ইমার্জেন্সি অপারেশন চলমান এবং আরও কয়েকটা অপেক্ষমাণ তালিকায় ছিল। রোগী আজ শনিবার সকাল আনুমানিক ৬টা ৫০ মিনিটের দিকে মারা যান। তখনও রোগীর কোন পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লাশ মর্গে ছিল। বিকেলে স্বজনরা আসে সাথে ছাত্রনামধারী ৫০-৬০ জন বহিরাগতরা জরুরি অপারেশন থিয়েটার ২০১ এ হামলা করে ৩ জন রেসিডেন্ট,একজন নিউরোসার্জন কে আহত করে। আজকে গ্রীণ ইউনিটের জরুরি ওটি চলছিল। রোগী BUBT এর ছাত্র পরিচয় পাওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, এটা ঠিক অতীতের চিকিৎসকদের উপর নিপীড়নের মতই চলমান অস্থিতিশীল পরিবেশের সুযোগ নিয়েছে একদল দুর্বৃত্তরা। যেহেতু Physical Assault হয়েছে, বিষয়টা হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। একজন রেসিডেন্টকে ওটি রুম থেকে মারতে মারতে ডিরেক্টর স্যারের রুমে নিয়ে যাওয়া অতীতের যেকোন ঘটনার চেয়েও ভয়ংকর। এছাড়াও ২ দিন আগে ক্যাজুয়ালিটিতে একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
চিকিৎসকদের উপর হামলার বিচার দাবি করে ডা. সাব্বির হোসেন সাগর বলেন, ইতোমধ্যে স্যারদের সঙ্গে আলোচনায় আমাদের দুইটি দাবি জানিয়েছি। আজকে রাত ১০টা থেকে ঢামেক হাসপাতালসহ দেশের সকল মেডিকেল হাসপাতালের ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। এ ছাড়া ১২ ঘণ্টার মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য প্রমানাদির আলোকে মামলা দায়ের ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
এছাড়াও দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য স্যাররা ২৪ ঘণ্টার সময় চেয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতিতে যাবেন ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।