চিকিৎসা ও সচেতনতায় অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব: অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ

ইলিয়াস হোসেন
2024-05-07 19:10:01
চিকিৎসা ও সচেতনতায় অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব: অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ

নিয়মিত চিকিৎসা ও সচেতনতায় ফুসফুসের রোগ অ্যাজমা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব (ইনসেটে অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন}

অ্যাজমা প্রধানত বংশগত রোগ। এই রোগীদের সুস্থতা নির্ভর করে তার স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণের ওপর। নিয়ম মেনে চললে অ্যাজমা রোগীর ভোগান্তি বা কষ্ট কম হয়। তারাও সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপনে সক্ষম হন। মঙ্গলবার (৭ মে) বিশ্ব অ্যাজমা দিবস উপলক্ষে ডক্টর টিভিকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্ষব্যাধি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন।  

তিনি জানান, অ্যাজমার বেশির ভাগ কারণই অজানা। অনেক ক্ষেত্রেই তা বংশগত অর্থাৎ জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে। অ্যাজমা আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসকষ্ট হয়। বুক চেপে আসে। শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। শ্বাস নিতে গেয়ে শব্দ হয়। এগুলো অ্যাজমার মূল লক্ষণ। এছাড়াও বার্ধক্যজনিত শ্বাসকষ্ট, যা ধূমপানের কারণে হতে পারে। এ থেকে মুক্তির উপায় হলো রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রথমে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।

অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন বলেন, অ্যাজমা রোগী শনাক্তে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করা হয়ে থাকে। এরমধ্যে- স্পাইরোমেট্রি, পিক ফ্লো মিটার, মিথাকলিন চ্যালেঞ্জ টেস্ট, আইজিই পরীক্ষা। তবে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় রোগের ইতিহাসকে। অ্যাজমার ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়। রোগকে পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়। তাই চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হলো অ্যাজমা রোগকে নিয়ন্ত্রণ করা। সুস্থ জীবনযাপন ও সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে অ্যাজমা রোগীরাও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা সঠিক চিকিৎসা নিলে অ্যাজমাজনিত কারণে রোগীর মৃত্যুর হার একেবারেই কম। 

তিনি বলেন, অতিরিক্ত ঠান্ডা ও গরমে অ্যালার্জি রোগীদের সমস্যা বেড়ে যায়। এ সময় তাদেরকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। ধুলা-বালি ও ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে। 

কিছু খাবার আছে- যেগুলো খেলে অ্যাজমা রোগ বেড়ে যায়। সেগুলো না খাওয়া। শীত এবং গরমের শুরুতে অ্যাজমা রোগীরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ কারণে প্রতিবছর শীতের আগে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নিতে পারলে অ্যাজমা রোগীরা ভাল থাকবেন। ধূমপান করলে অ্যাজমাজনিত জটিলতা অনেক বেড়ে যায়। তাই এ ধরনের রোগীদেরকে অবশ্যই ধূমপান পরিহার করতে হবে। এমনকি ধূমপায়ীদের সঙ্গে তারা অবস্থানও করবেন না। একরুমে বসবাস করবেন না। যে ঘরে অ্যাজমা রোগী আছেন- সেই ঘরে কেউ যেন ধূমপান না করেন। তাদের প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে হবে। অধিক গরমের সময় রাস্তাঘাটে বায়ুদূষণের মাত্রাও বেশি হয়ে থাকে। এ সময় প্রয়োজন ছাড়া গরমে বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। 

অধ্যাপক ডা. মোশাররফ হোসেন বলেন, আশপাশের বাসায় কনস্ট্রাকশনের কাজ চললে, সে সময় ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে রাখা দরকার। কমপক্ষে দরজা জানালায় ভারী পর্দা দিয়ে রাখতে হবে। এতে ধূলাবালি ঘরে প্রবেশ করতে পারবে না।  

তিনি আরও বলেন, পথে ঘাটে চলার সময় ধূলাবালি থেকে রক্ষা পেতে অ্যাজমা রোগীদের সঠিক মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। মাস্ক যেন পরিচ্ছন্ন হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ অপরিচ্ছন্ন মাস্ক ব্যবহার করলে অ্যাজমারোগীর ফুসফুসে ইনফেকশন হতে পারে। এতে জটিলতা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন। 


আরও দেখুন: