জমির দখল বুঝে পেল রামেবি কর্তৃপক্ষ
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) স্থাপন প্রকল্পের ৬৭.৬৭৯২ একর অধিগ্রহণকৃত জমি সরেজমিনে দখল বুঝে পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (রামেবি) স্থাপন প্রকল্পের ৬৭.৬৭৯২ একর অধিগ্রহণকৃত জমি সরেজমিনে দখল বুঝে পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রোববার (২৪ মার্চ ) সকাল ১০টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের পক্ষে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কানুনগো মো. জাকির হুসাইন সরদারের নেতৃত্বে একটি টিম রামেবির রেজিস্ট্রার (অ.দা.) মো. জাকির হোসেন খোন্দকারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলকে সরেজমিনে সীমানা নির্ধারণ করে জমি বুঝিয়ে দেন।
এ সময় রামেবির প্রক্রিয়রমেন্ট কনসালটেন্ট রেয়াজাত হোসেন, সহকারি রেজিস্ট্রার (চ.দা.) রাশেদুল ইসলাম, সহকারী কলেজ পরিদর্শক (চ.দা.) নাজমুল হোসাইন, লিয়াজোঁ ও প্রটোকল অফিসার ইসমাঈল হোসেন, জনসংযোগ দপ্তরের সেকশন অফিসার জামাল উদ্দীন, রামেবি স্থাপন প্রকল্পের সেকশন অফিসার রেজাউল উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরাফ হোসেন, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা নূর রায়হান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, রাজশাহী জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার ০৭/২২-২৩ নং এলএ কেসভুক্ত ‘‘রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়’’ স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী জেলার পবা উপজেলাধীন ৭৪ নং বাজেসিলিন্দা মৌজায় ৪৫.৪৭৮৭ একর , ৭৫ নং বারইপাড়া মৌজায় ০.৭৪৯০ একর এবং বোয়ালিয়া থানাধীন ৮২ নং বড়বনগ্রাম মৌজায় ২১.৪৫১৫ একরসহ সর্বমোট ৬৭.৬৭৯২ একর জমি অধিগ্রহণ করে রামেবি কর্তৃপক্ষকে বৃঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২২ সালের ১৪ জুন রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদিত হয়। সে সময় ২০১৮ সালের রেট সিডিউল অনুযায়ী ডিপিপির প্রথম ধাপের ব্যয় ধরা হয় ১৮৬৭০৮.০০ লক্ষ (এক হাজার আটশত সাতষট্টি কোটি আট লক্ষ টাকা এবং বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ খাতে ৫৮৬ কোটি প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের রেট সিডিউল অনুযায়ী প্রথম ধাপের সংশোধিত ডিপিপির ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২২৫৭৯৪.৮৪ লক্ষ (দুই হাজার দুইশত সাতান্ন কোটি চুরানব্বই লক্ষ চুরাশি হাজার টাকা, যার মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ খাতের ব্যয় ১৭২ কোটি ১৭ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৫৮ কোটি ১৭ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা। গত বছর ৯ নভেম্বর একনেক সভায় রামেবির সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিত হলে ভূমি অধিগ্রহণ খাতের বকেয়া ১৭২ কোটি ১৭ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকা চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সংশ্লিষ্ট খাতে প্রদান করা হয়। ভূমি অধিগ্রহণ খাতের ব্যয়ের সম্পূর্ণ টাকা জেলা প্রশাসকের সংশ্লিষ্ট খাতে প্রদানের পর আজ ২৪ মার্চ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রামেবি কর্তৃপক্ষকে জমির দখল সরেজমিনে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রকাশ থাকো যে, রামেবি উপাচার্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম মোস্তাক হোসেন উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েই একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ডিপিপি তৈরিতে সর্বাধিক গুরুত্ব দেন। এরফলে দ্রুত সময়ের মধ্যে মূল ডিপিপি ও পরবর্তীতে সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিত হয়। রাজশাহী অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে ১২ শ’ শয্যার একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল। ১০টি চিকিৎসা অনুষদের অধীনে ৬৮টি বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি দেওয়া দেয়া হবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়া চিকিৎসা সেবার মানকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম চলবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম ধাপে জমি অধিগ্রহণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন, হাসপাতাল, নার্সিং কলেজ, স্কুল, ডে-কেয়ার সেন্টার, কেন্দ্রিয় লাইব্রেরি, ভিসির বাংলো, ডাক্তার ও নার্সিং হোস্টেল, মরচুয়ারি ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ ২১টি ভবন নির্মাণ করা হবে।
বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাজশাহী, রংপুর সরকারি-বেসরকারি ৬৯টি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের এমবিবিএস, বিডিএস, ফিজিওথেরাপি ও ইউনানি মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি, বিএসসি নার্সিং এবং মেডিকেল টেকনোলজি কোর্সের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এসব কোর্সের শিক্ষার্থী নিবন্ধন, পরীক্ষার ফরম পূরণ, ফলাফল তৈরি সহ সব ধরণের ডাটা এন্ট্রি কার্যক্রম সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইনে সম্পন্ন করা হচ্ছে। এছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু থেকেই পরীক্ষার খাতা কোডিং-ডিকোডিং করে মূল্যায়ন করা হচ্ছে, যা বাংলাদেশে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।