ঘুমের ওষুধ দিয়ে প্রসূতির ইনজেকশন বানাত অসাধু চক্র

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2024-03-20 11:16:39
ঘুমের ওষুধ দিয়ে প্রসূতির ইনজেকশন বানাত অসাধু চক্র

দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে ৮ টাকা মূল্যের ‘জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশনকে ঘরোয়াভাবে রূপান্তর করে ৬০০ টাকার চেতনানাশক ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশন হিসেবে বাজারজাত করে আসছিল অসাধু চক্রটি

সন্তান জন্মের সময় প্রসূতি মায়েদের ব্যথা উপশমের জন্য ব্যবহার করা হয় ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশন। অত্যন্ত সংবেদনশীল এ ওষুধ অপারেশন সময় বা অপারেশনের পর চিকিৎসকরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করেন। অথচ দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে ৮ টাকা মূল্যের ‘জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশনকে ঘরোয়াভাবে রূপান্তর করে ৬০০ টাকার চেতনানাশক ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশন হিসেবে বাজারজাত করে আসছিল একটি চক্র।

গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম মতিঝিল, বাড্ডা ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলেন- মো: আলমগীর খান, মো: মাসুদ রানা ও মো: আহসান হাবীব শাওন। মতিঝিল গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো: এরশাদুর রহমানের নেতৃত্ব অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে অবস্থিত নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ।

গোয়েন্দা প্রধান বলেন, ‘জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশনকে চেতনানাশক ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশনে রূপান্তরিত করে এ চক্র দীর্ঘদিন ধরে বাজারজাত করে আসছিল। আমরা তিন জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এদের মধ্যে মো: আলমগীর খান রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকা থেকে ‘জি-ডায়াজিপাম’ ঘুমের ইনজেকশন প্রতিটি ৮ টাকায় কিনে বাসায় নিয়ে যায়। পরে ইনজেকশন অ্যাম্পুলকে এসিড দিয়ে ভিজিয়ে রেখে গায়ে লেখা তুলে কাঠ ও প্লাস্টিক দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি স্কিন প্রিন্ট করার ফ্রেম দিয়ে ‘জি-পেথিডিন’ ইনজেকশনের নামে নামকরণ করে। পরে এসব অ্যাম্পুল প্লাস্টিকের ট্রেতে ৫টি করে সাজিয়ে হাতে চালানো চাপ মেশিন দিয়ে ‘জি-পেথিডিন’ ব্যথানাশক ফয়েল পেপার সংযুক্ত করা হয়। আর বাজারে এসব নকল ‘জি-পেথিডিন’ প্রতিটি ৬০০ টাকায় বাজারজাত করা হয়।

তিনি বলেন, রাজধানীর অনেক খ্যাতনামা হাসপাতালের নিচের বিভিন্ন ফার্মেসিতে এসব ওষুধ ব্যবহার করা হয়। আমরা বারিধারা জেনারেল হাসপাতালের নিচের ফার্মাসিস্টের এর সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছি, তাকে আটক করা হয়েছে। একইসঙ্গে তদন্ত করে যাদের নাম পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

গোয়েন্দা প্রধান জানান, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ২০০টি জি-পেথিডিন ইনজেকশন, ২২০টি জি-পেথিডিনের অ্যাম্পুল, ১ হাজার ১০টি জি-ডায়াজিপামের অ্যাম্পুল, ৫২০টি জি-পেথিডিনের ফাঁকা বক্স, ২০০টি জি-পেথিডিন ইনটেক স্টিকার, ২টি (১২ কেজি) জি-পেথিডিন ফয়েল পেপার, ১ হাজার ৫০০টি জি-পেথিডিনের ব্যবহারবিধি, ১টি জি-পেথিডিনের ফয়েল লাগানোর জন্য লোহার চাপ মেশিন, ৫ কেজি অ্যাসিড, ৫টি কাঠ ও প্লাস্টিক দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি স্কিন প্রিন্ট করার ফ্রেম, ২৫০টি জি-পেথিডিন রাখার প্লাস্টিকের ট্রে জব্দ করা হয়েছে।


আরও দেখুন: