বিএসএমএমইউকে ক্যান্সার রোগীদের স্ক্রিনিংয়ের দায়িত্ব নিতে হবে: ভিসি
বিএসএমএমইউর এ-ব্লক অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশের ক্যান্সারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) অনকোলজি বিভাগকে ক্যান্সার বিভাগসহ, অকুলার অনকোলজি, আই, ইএনটি, সার্জিক্যাল অনকোলজি, গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজিসহ সকল বিভাগে ক্যান্সার রোগীদের রেজিস্ট্রি করার দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
রোববার (১০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশের ক্যান্সারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের কাছে ক্যান্সার রোগীর কোন ডাটা নেই। আমাদের দেশে ক্যান্সারের কোন স্ক্রিনিং করা হয় না। এ কারণে বিএসএমএমইউর অনকোলজি বিভাগকে ক্যান্সার বিভাগসহ, অকুলার অনকোলজি, আই, ইএনটি, সার্জিক্যাল অনকোলজি, গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজিসহ সকল বিভাগে ক্যান্সার রোগীদের রেজিস্ট্রি করার দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ভিসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্সার চিকিৎসার সর্বাধুনিক লিনিয়াক মেশিন, পেট স্ক্যান মেশিন ক্রয় করার ফান্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে ক্যান্সার চিকিৎসায় সাইবার নাইফ, গামা নাইফ, গামা সার্জারি, রেডিও সার্জারি করা যায়- এসব বিষয় তরুণ ক্যান্সার চিকিৎসকদের মাথায় রাখতে বলেন তিনি।
সেমিনারে আলাদা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলোজি বিভাগের চেয়াম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাউদ্দিন শাহ ও অনকোলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদিয়া শারমিন।
সেমিনারে বলা হয়, এক বিংশ শতাব্দীতে অসংক্রমক রোগের মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। বিশ্বের ক্যান্সার রোগ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশেও ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিএসএমএমইউয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের কেমোথেরাপী, ইমিউনোথেরাপী এবং রেডিও থেরাপীর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। গত বছর (২০২৩) এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলোজি বিভাগের মাধ্যমে ১৪ হাজার রোগী বর্হিবিভাগে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে সাড়ে ৫ হাজার নতুনভাবে শনাক্তকৃত রোগী চিকিৎসা নেন। বাকি প্রায় সাড়ে ৮ হাজার রোগী বিভিন্নভাবে এখানকার চিকিৎসা এবং পর্যবেক্ষণের আওতায় রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডে-কেয়ার সেন্টারে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৪ জন ক্যান্সার রোগী প্রতিনিয়ত কেমোথেরাপী, ইমিউনোথেরাপী ও টার্গেটেড থেরাপী গ্রহণ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তঃবিভাগে মোট শয্যা সংখ্যা ৬০টি। এখানেও ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর জন্য কেমোথেরাপী, ইমিউনোথেরাপী এবং টার্গেটেড থেরাপী প্রদান করার জন্য ক্যান্সার আক্রান্ত বিভিন্ন রোগীকে রোগের বর্তমান অবস্থা, পর্যায় অনুযায়ী অত্যাধুনিকমানের চিকিৎসা সেবা হিসেবে রেডিও থেরাপী প্রদান করা হয়। রেডিও থেরাপীর মধ্যে থ্রিডিসিআরটি, ভিএমএটি পদ্ধতি উল্লেখযোগ্য।
বর্তমানে জরায়ুমুখের আক্রান্ত রোগীকে ব্রাকি থেরাপী দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্সার বিভাগকে আরও অত্যাধুনিক উন্নতমানের ক্যান্সার সেন্টার হিসেবে গড়ে তুলতে আরও উন্নত প্রযুক্তির ক্যান্সার /রেডিও থেরাপীর মেশিন হিসেবে টমোথেরাপী, সাইবার নাইফ, গামা নাইফ সংযোজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, অনকোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ্সহ বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান ও মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ। সেমিনার সঞ্চালনা করেন হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফয়সাল ইবনে কবির। সেমিনারে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কনসালটেন্ট, চিকিৎসক ও রেসিডেন্ট উপস্থিত ছিলেন।