গুলিবিদ্ধ সহপাঠীকে সঙ্গে নিয়েই ক্লাসে ফিরতে চান মেডিকেল শিক্ষার্থীরা
সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীরা
সিরাজগঞ্জে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমাল সুস্থ হওয়ার পর তাকে সাথে নিয়ে ক্লাসে ফিরতে চান সহপাঠীরা। এ লক্ষ্যে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের শাস্তি দাবিতে সোমবার থেকে ক্লাস বর্জন করা এসব শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার ক্লাসে ফিরেই ৭ দিনের ছুটি নিয়েছেন। সূত্র: ঢাকা পোস্ট।
কলেজের তৃতীয় বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, চোখের সামনে সহপাঠীর ওপর নির্মম ঘটনা ঘটে গেছে। এতে সবাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। এ কারণে মনটাকে একটু ভালো করে আহত সহপাঠীকে সুস্থ করে তার পর তাকে সঙ্গে নিয়েই আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই। তাই কলেজের অধ্যক্ষের কাছে তৃতীয় বর্ষের সবাই মিলে সাত দিনের ছুটির আবেদন করলে তিনি সেটি মঞ্জুর করেছেন।
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিরুল হোসেন চৌধুরী বলেন, আমরা বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসেছিলাম। তাদেরকে বুঝিয়েছি যে, ক্লাস না করলে তাদেরই পড়াশোনার ক্ষতি হবে। এবং অভিযুক্ত সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একদিকে তাকে আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন, অন্যদিকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এরপর তারা ক্লাসে ফিরেছিল।
তিনি বলেন, আজ তারা ক্লাস শুরু করে। এরপর তারা জানায়, তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। এরজন্য সবাই আগামী এক সপ্তাহের জন্য ছুটি চায়। পড়ে তৃতীয় বর্ষের ৬৫ জন শিক্ষার্থীরই এক সপ্তাহের ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন কলেজের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যায় তাকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। পরে রাতে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা। পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা হয় তার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এদিকে আদালতে ওই শিক্ষকের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।