দেশে হাসপাতালের শয্যা ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৭৫টি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
জাতীয় সংসদ অধিবেশন (বাম) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন (ডান)
দেশের হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি ও শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানান তিনি।
২০২২ সালের হেলথ বুলেটিনের তথ্য থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, হাসপাতালগুলােতে মোট ১ লাখ ৭১ হাজার ৬৭৫টি বেড রয়েছে। এরমধ্যে সরকারি বেড সংখ্যা ৭১ হাজার ৬৬০টি এবং বেসরকারি বেড ৯৯ হাজার ৯৭৫টি। দেশে প্রতি ৯৯০ জন লোকের বিপরীতে একটি বেড রয়েছে।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের লিখিত উত্তরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, দেশের নিম্ন আয়ের জনগণের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে ও চিকিৎসা সেবা আরো উন্নত করার লক্ষ্যে দেশের সরকারি হাসপাতালসমূহের শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির (৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালকে ৫০ শয্যায় এবং ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালকে ১০০ শয্যায় উন্নীত) প্রক্রিয়া, শূন্য পদে চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চিকিৎসার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ, বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ-ব্যাধির আধুনিক চিকিৎসা ও প্রতিরোধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালসমূহে বিনামূল্যে ওষুধ-পত্র ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সেই লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে সরকার জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি-২০১১ গ্রহণ ও এর আলোকে ‘স্বাস্থ্য সেবা অর্থায়ন কৌশলপত্র : ২০১২-২০৩২’ প্রণয়ন করেছে। এই কৌশলপত্রের সুপারিশ ও প্রস্তাবনা অনুযায়ী দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারসমূহকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের লক্ষ্যে একটি সামাজিক স্বাস্থ্য বিমা পাইলট প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। এছাড়া আনুষ্ঠানিক খাতের সরকারি চাকরিজীবী ও পোশাকশিল্প শ্রমিকদের জন্য সামাজিক স্বাস্থ্য বিমা চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে অনানুষ্ঠানিক খাতের জনগোষ্ঠীকেও এ বিমার আওতায় আনা হবে।
একই সংসদ সদস্যের অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, বর্তমান সরকারের গত তিন মেয়াদে দেশের স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীনে ৮টি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসমূহে হৃদরোগ, ক্যান্সার ও কিডনি রোগের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বিশেষায়িত স্বতন্ত্র ইউনিট নির্মাণ করা হচ্ছে। মুমূর্ষু রোগীদের সুচিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালসমূহে পর্যায়ক্রমে করোনারি কেয়ার ইউনিট, ডায়ালাইসিস ইউনিট ও ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষায়িত হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতালে সব রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। জেলা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে ১০ শয্যার আইসিইউ নির্মাণের প্রকল্প চলমান রয়েছে।