যমজ তিন ভাই এখন মেডিকেলের ছাত্র

অনলাইন ডেস্ক
2024-02-13 15:34:33
যমজ তিন ভাই এখন মেডিকেলের ছাত্র

যমজ তিন ভাইয়ের তিন জনই এখন মেডিকেলের ছাত্র

বাবা হারা যমজ তিন ভাইয়ের তিন জনই এখন মেডিকেলের ছাত্র। মাফিউল-শাফিউল-রাফিউলের গল্প যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানায়।

তিন ছেলে আর এক মেয়েকে রেখে মারা যান বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ির বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক গোলাম মোস্তফা। এরপর থেকেই বিধবা আর্জিনা বেগমের সংগ্রামের জীবন। জমি বর্গা আর বিক্রি করে চালিয়েছেন সন্তানদের পড়াশুনার খরচ। তিন ছেলে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় টিকে চিকিৎসা শাস্ত্রের ছাত্র হতে পারায় তার সেই কষ্ট এখন সার্থক।

সম্প্রতি প্রকাশিত মেডিকেল পরিক্ষার ফলাফলে তিন যমজের দুইজন উত্তীর্ণ হয়েছেন। আরেকজন গতবছরেই শুরু করেছেন মেডিকেলের ছাত্রজীবন।

মাফিউল হাসান ২০২৩ সালে ঢাকা সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে সেখানে পড়াশোনা করছেন ৷ আর ২০২৪ সালে শাফিউল ইসলাম দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে ও রাফিউল হাসান নোয়াখালি আব্দুল মালেক মেডিকেল কলেজে কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।

২০২০ সালে ধুনট সরকারি নইম উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেছেন এই তিন সহোদর। এরপর বগুড়া সরকারি শাহ সুলতাল কলেজ থেকে ২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিকেও পেয়েছেন জিপিএ ৫। বাবা হারা যমজ তিন সহোদরের এমন কীর্তি সাড়া ফেলেছে গোটা এলাকায়।

ছেলেদের এমন সাফল্যে মা আর্জিনা বেগমের যেন আনন্দের সীমা নেই। এই রত্নগর্ভা জানান, স্বামী গোলাম মোস্তফা স্থানীয় মাঠপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ২০০৯ সালে মারা যান। অদম্য মেধাবী মাফিউল, শাফিউল ও রাফিউল তখন শিশু শ্রেণির ছাত্র। স্বামীর রেখে যাওয়া জমি বন্দক রেখে ছেলেদের পড়ালেখার কাজে লাগান। মেয়ে মৌসুমি বগুড়া সরকারি আযিযুল হক কলেজে স্নাতকে অধ্যয়নরত।

আরজিনা বেগম বলেন, আমার জমি না হয় শেষ হয়েছে। তবু এতিম ছেলে ও মেয়ে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার রাস্তায় পদাপর্ন করেছি। অবশিষ্ট যা আছে, তাও বিক্রি করে ওদের চিকিৎসক বানাবো।

এই সাফল্যের পরও অভাব অনটনের সংসারে তিন ছেলের লেখাপড়ার খরচ বহন করা নিয়ে এখনও বেশ চিন্তিত রত্নগর্ভা মা আর্জিনা বেগম। ছেলেদের পথ চলায় সরকারের সাহায্য চেয়েছেন তিনি।


আরও দেখুন: