ক্যান্সার প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজের হাতেই
বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে সিলেটের নর্থ ইষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল আয়োজিত আলোচনা সভা
ক্যান্সার প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজের হাতেই রয়েছে। এজন্য নিজেকে সচেতন রাখার পাশাপাশি তামাক আর ধূমপান চিরতরে ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে বিশ্বে এখন এক তৃতীয়াংশ ক্যান্সার প্রতিরোধযোগ্য। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ব ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে সিলেটের নর্থ ইষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।
“আসুন আমরা ক্যান্সার চিকিৎসায় বৈষম্য দূর করি”-এ স্লোগানে দিবসটি পালনের অংশ হিসেবে সকালে হাসপাতাল প্রাঙ্গন থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি চন্ডিপুল এলাকা ঘুরে হাসপাতালে এসে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। এতে নর্থ ইষ্ট ক্যান্সার হাসপাতাল থেকে সেবা গ্রহণকারী সহস্রাধিক রোগী এবং সিলেটের বিশিষ্টজনরা অংশ নেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নর্থ ইষ্ট মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও নর্থ ইষ্ট প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন নর্থ ইষ্ট প্রাইভেট লিমিটেডের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আফজল মিয়া।
সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, বিশ্বে ২০৫০ সাল নাগাদ ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় আরো কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসা দরকার। ক্যান্সার চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাই এই চিকিৎসার জন্য সাপোর্ট গ্রুপ তৈরি করা দরকার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এরকম সাপোর্ট গ্রুপ রয়েছে। দেশের সামাজিক সংগঠন ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোকেও এ ব্যাপারে আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার। বিত্তশালীদের দিয়ে সাপোর্ট গ্রুপ তৈরি করে রোগীদের পাশে দাঁড় করাতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, সিলেটবাসীর সাপোর্ট পেলে নর্থ ইষ্ট ক্যান্সার হাসপাতালকে বিশ্বমানের পূর্নাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দেয়া সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে সারা দেশ থেকে এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেও রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসছেন। অনেক অভিজ্ঞ চিকিৎসক এই হাসপাতালে ক্যান্সার রোগী রেফার করছেন। এখান থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। ভবিষ্যতেও এই হাসপাতাল উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন তিনি।
কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. তনুশ্রী সরকার ও ডা. জান্নাতুল ফেরদৌসের যৌথ সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন নর্থ ইষ্ট প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মুসা এম এ কাইয়ুম, অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. মোখলেছ উদ্দিন, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. আব্দুল খালেক বড় ভূইয়া, সার্জারী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. গোলজার আহমদ, জালালাবাদ গ্যাস এর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোটারিয়ান সোয়েব মতিন, মদন মোহন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আতাউর রহমান পীর, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলম, সিলেট জেলা প্রাইভেট হাসপাতাল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. নাসিম আহমদ, সিলেট লায়ন্স ক্লাবের সাবেক সভাপতি লায়ন্স মাহবুবুল হক, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ডিন অধ্যাপক নজরুল হক চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার ড. জামিল আহমদ চৌধুরী, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট জাকির হোসেন, নর্থ ইষ্ট প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আজিজুর রহমান, ডা. শামীমুর রহমানসহ অনেকে।
সেমিনারে প্রেজেন্টশন উপস্থাপন করেন অধ্যাপক অনকোলজি বিভাগের ডা. দেবাশীষ পাটোয়ারী এবং ডেন্টাল ইউনিটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এ এস এম ইমরান হোসাইন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনকোলজি বিভাগের প্রফেসর ডা. তৈমুর হোসেন তালুকদার। বেশ কয়েকজন সেবাগ্রহীতাও বক্তব্য রাখেন।