বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস আজ
জানুয়ারি মাসের শেষ রোববার বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস হিসেবে পালন করা হয়
আজ রোববার (২৮ জানুয়ারি), বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসের শেষ রোববার বিশ্ব কুষ্ঠ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সে হিসাবে এ বছর ২৮ জানুয়ারি বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে। কুষ্ঠরোগের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই দিবস পালন করা হয়।
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব এন্টি-লেপ্রসি এসোসিশেয়নস (আইলেপ) এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রাউল ফোলেরো বিশ্বব্যাপী কুষ্ঠরোগ বিষয়ক ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধিকল্পে ও কুষ্ঠরোগের প্রতি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ১৯৫৪ সালে দিবসটি উদযাপনের জন্য উদ্যোগ নেন। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কুষ্ঠবিরোধী সংগঠনসমূহের আন্তর্জাতিক ফেডারেশন ‘আইলেপ’, যা ১৩টি আন্তর্জাতিক এনজিও’র সমন্বয়ে গঠিত, এই দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয়।
এই দিবসের উদ্দেশ্য হলো কুষ্ঠ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করা। জনবিচ্ছিন্ন কুষ্ঠ আক্রান্ত ব্যক্তিদের সমাজে পুনঃগ্রহণ, সর্বপ্রকার কুষ্ঠজনিত কুসংস্কার দূরীকরণ, এই সকল লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে জনসাধারণ এবং কুষ্ঠ আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঠিক তথ্য ও শিক্ষা প্রদান করাই হচ্ছে এই দিবসের লক্ষ্য।
বাংলাদেশে এই বছর উক্ত দিবসটি পালনের গুরুত্ব রয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজধানীতে অনুষ্ঠিত জাতীয় কুষ্ঠ সম্মেলনে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে কুষ্ঠমুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানান। কুষ্ঠ মানব ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাচীন রোগ। মানব সভ্যতার বিকাশ ও সামাজিক উন্নতির সাথে সাথে উন্নত দেশগুলোতে এই রোগের প্রাদুর্ভাব একবারেই কমে এসেছে।
১৮৭৩ সালে নরওয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. আরমার হ্যানসেন কুষ্ঠরোগের জীবাণু ‘মাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপ্রী’ আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কারের ফলে প্রমাণিত হয় যে, কুষ্ঠ একটি ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ, জন্মগত, বংশগত বা অভিশাপের ফল নয়। হাজার হাজার বছর ধরে কুষ্ঠরোগ ও কুষ্ঠরোগাক্রান্ত ব্যক্তিগণকে অভিশপ্ত এবং অস্পৃশ্য বলে গণ্য করা হতো এবং অনেককেই দীপান্তরিত, বনবাস, গৃহচ্যুত করা হতো। সামাজিক ও পারিবারিক সম্পর্কগুলো শিথিল হয়ে যেত। হাজার হাজার কুষ্ঠরোগাক্রান্ত মানুষ মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হতো।