শিশু আয়ানের মৃত্যু: হাইকোর্টে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
রাজধানীর ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
রাজধানীর ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সংস্থার মহাপরিচালকের পক্ষে উপ-পরিচালক (আইন) ডা. পরিমল কুমার পাল ১৫ পৃষ্ঠার এই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলেরও শুনানি হতে পারে। এ ছাড়াও আয়ানের মৃত্যুর ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশনার বিষয়ে হাইকোর্টে শুনানির কথা রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একই বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য ছিল। সেদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তদন্তের কোনো অগ্রগতি প্রতিবেদন হাইকোর্টে জমা না দেওয়ায় এ বিষয়ে শুনানি হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন জমা ও আদেশের জন্য ২৮ জানুয়ারি পরবর্তী দিন নির্ধারণ করেন আদালত।
এর আগে, চিকিৎসায় গুরুতর অবহেলায় আয়ানের মৃত্যুতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে শিশুটির পরিবারকে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া হাসপাতালে সুন্নতে খতনা করে এক সপ্তাহ ধরে চিকিৎসাধীন থাকার পর পাঁচ বছরের শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনা কীভাবে, কোন কারণে ঘটেছে তা যথাযথ অনুসন্ধানের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (ডিজি) প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকদের অবহেলা পেলে ব্যবস্থা নিতেও বলেন হাইকোর্ট।
শিশুর বাবা শামীম আহমেদের করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে সেদিন রিটের পক্ষে শুনানিতে রিটকারী আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম নিজেই শুনানি করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। এ সময় শিশুটির বাবা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এরও আগে জনস্বার্থে স্বপ্রণোদিত হয়ে ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম রিটটি দায়ের করেন।
‘লাইফ সাপোর্ট থেকে ফিরল না আয়ান: খতনা করাতে গিয়ে মৃত্যু’ শিরোনামে ৮ জানুয়ারি একটি দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়াও ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন। পরে রিটে আবেদনকারী হিসেবে যুক্ত হন শিশুটির বাবা শামীম আহমেদ। পাশাপাশি হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল ও নতুন রোগী ভর্তি না করাতে নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করে রিটকারীপক্ষ। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ আদেশ দেন।