আজ রাতেই ১৫শ’ তম কিডনি প্রতিস্থাপন করতে যাচ্ছেন অধ্যাপক ডা. কামরুল
কিডনীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম
আজ (বৃহস্পতিবার) রাতেই বিনা পারিশ্রমিকে দেড় হাজার কিডনি প্রতিস্থাপনের মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছেন কিডনীরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম। রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত সিকেডি অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে রাত ১১টার পর মাদারীপুরের বাসিন্দা ২৭ বছর বয়সি মো. শহিদুল ইসলামের দেহে কিডনী প্রতিস্থাপনের মধ্যদিয়ে এই অনন্য রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক। এবারের রোগী শহিদুলকে কিডনি দিচ্ছেন তার বাবা মো. তারা মিয়া আকন।
উল্লেখ্য, কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য ব্যক্তিগত পারিশ্রমিক নেন না মানবিক চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম। এমনকি প্রতিস্থাপন পরবর্তী ফলোআপ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যও রোগীর কাছে নেন না কোনো ফি নেন না।
কিডনী বিষয়ে বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসাবে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে সিকেডি অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালের যাত্রা শুরু। এখানে নেফ্রলোজী ও ইউরোলজী চিকিৎসার পাশাপাশি কিডনী বিকল রোগীদের জন্য অত্যন্ত সাশ্রয়ী খরচে ডায়ালাইসিস ও ট্রান্সপ্লান্টের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।
শুরুতে জমানো টাকায় গাড়ি না কিনে, সিকেডি হাসপাতালের জন্য কিনেছিলেন ডায়ালাইসিস মেশিন। এরপর কোন পারিশ্রমিক ছাড়াই শুরু করেন কিডনি প্রতিস্থাপন। এখন পর্যন্ত তাঁর অপারেশনে সফলতার হার ৯৫ শতাংশ।
এরআগে, দুই বছর আগে নিজের বিনাপারিশ্রমিকে ১ হাজার কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেশ বিদেশে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন অধ্যাপক ডা. কামরুল ইসলাম। এরপরই মানবিক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হন এই শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। এক হাজার কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য তাঁর সময় লেগেছিল দীর্ঘ ১৪ বছর। অথচ গত ২৬ মাসে ৫শ কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন তিনি। রোগীদের মাত্রাতিরিক্ত চাপের কারণে এখন সপ্তাহে ৫টি কিডনি প্রতিস্থাপন করে থাকেন তিনি।
বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত যতগুলো কিনডি প্রতিস্থাপন হয়েছে তার এক তৃতীয়াংশ-ই ডা. কামরুল ইসলামের হাত ধরে। প্রতিস্থাপনের সংখ্যা বাড়াতে আগামীতে ক্যাডাভারিক বা ব্রেইন ডেথ রোগীর শরীর থেকে কিডনি নিয়ে তা প্রতিস্থাপনের কথা ভাবছেন এই মানবিক চিকিৎসক।
প্রসঙ্গত: ডা. কামরুল ইসলামের হাতে গড়া সিকেডি এন্ড ইউরোলজি হাসপাতালে কর্মীর সংখ্যা সাড়ে তিনশ এর অধিক। সকলেই পান তিন বেলা খাবার।