জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ মালিক ছিলেন দূরদর্শী সম্পন্ন কর্মবীর মানুষ

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2023-12-11 17:52:17
জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ মালিক ছিলেন দূরদর্শী সম্পন্ন কর্মবীর মানুষ

বাংলাদেশের কার্ডিওলজির পথিকৃৎ ও জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ডা. আব্দুল মালিক স্মরণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল

বাংলাদেশের কার্ডিওলজির পথিকৃৎ ও জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ডা. আব্দুল মালিক ছিলেন দূরদর্শী সম্পন্ন কর্মবীর মানুষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। 

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে হৃদরোগ বিভাগ এই স্মরণ সভার আয়োজন করে।

এতে প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সদ্য প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ডা. আব্দুল মালিক ছিলেন দূরদর্শী সম্পন্ন কর্মবীর মানুষ। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি কাজকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের হৃদরোগ চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনার পথিকৃৎ। তার সাথে আমার বহুকাজ করার সুযোগ হয়েছিল। তিনি হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, তার সহযোগীতায় গোপালগঞ্জ হার্ট ফাউন্ডেশন তৈরি করে সেখানকার মানুষকে সেবা দানের সুযোগ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। তিনি বঙ্গবন্ধুর পিতা মাতাকেও সেবা দিয়েছিলেন। তিনি সারা জীবন মানুষকে সেবা দিয়েছেন। যারা তার ছাত্র তারাও মানুষকে সেবা দিয়েছে।। তিনি পরকালে এসব সেবার ফল সদকায়ে জারিয়া হিসেবে পাবেন। তিনি জান্নাতবাসী হবেন।

বিএসএমএমইউর ভিসি বলেন, অধ্যাপক ডা. আব্দুল মালিক ও তার সহধর্মিনীর মধ্যে অনেক মিল ছিল। তার অর্ধাঙ্গিনীর সহযোগীতায় এতদূর এসেছেন বলে আমরা জেনেছি। তাঁর স্ত্রীর কোন চাহিদা ছিল না বলে তার জীবনে এত বড় কাজ করা সম্ভব হয়েছে। মালিক স্যার অনেক ব্যস্ততার কারণে সময়মত খেতে পারতেন না। অথচ তার অর্ধাঙ্গিনী তার খাবার নিয়ে বসে থাকতেন। তিনি সন্তানদের তার মত করে বড় করে হৃদরোগীদের সেবায় নিয়োজিত করে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, অধ্যাপক ডা. আব্দুল মালিক স্যারের জীবন অনেক বর্ণাঢ্যময়। তার সঙ্গে অনেক জায়গায় অনেক একাডেমিক কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা তার বর্ণাঢ্য জীবন সবাই স্মরণ করব। তাকে নিদর্শন হিসেবে, তাকে আদর্শ ও উদাহরণ হিসেবে আমরা নিজেদের গড়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মেশকাত আহমেদ। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের হৃদরোগ চিকিৎসায় পথিকৃৎ হলেন প্রয়াত অধ্যাপক ডা. আব্দুল মালিক। বীজ স্বরূপ তার ছাত্ররা আজ মহীরূপে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ও বিদেশের হৃদরোগে চিকিৎসা সমান পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি হৃদরোগ প্রশমনের পাশাপাশি হৃদরোগ প্রতিরোধেও কাজ করেছে। হৃদরোগের চিকিৎসা সাধারণ মানুষের দৌরগোড়ায় নিয়ে যাবার জন্য তিনি নিরলস কাজ করে গেছেন। একই সঙ্গে মাদকবিরোধী সকল আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। তিনি অতি সাধারণ জীবন যাপন করতেন। তিনি অফিসে ছিলেন মিতব্যয়ী কিন্তু বাসায় ছিলে অনেক আতিথি পরায়ণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তিনি একাধারে দক্ষ সংগঠকের পাশাপাশি দক্ষ প্রশাসক ছিলেন। তিনি ছিলেন ¯েœহপরায়ন মানুষ। তিনি অসম্ভবভাবে সময়ানুবর্তিতা স্বভাবের মানুষ ছিলেন। তার কর্মনিপুণতার কারণে তরুণ চিকিৎসকদের কাছে অনুকরণীয় ছিলেন তিনি । তার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ হার্ট ফাউন্ডেশন সারাদেশে মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সেবার পাশাপাশি হার্ট ফাউন্ডেশনে একাডেমিক কার্যক্রমও যুক্ত হয়েছে। যেখানকার ছাত্ররা আজ সারাদেশে হৃদরোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। হৃদরোগের চিকিৎসায় অবদানের জন্য তিনি বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

স্মরণ সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন, প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কেএম এইচ এস সিরাজুল হক, অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আলী আহসান, অধ্যাপক ডা. একেএম ফজললুর রহমান, হার্ট ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আল রিজভী, অধ্যাপক ডা. মো. জালাল উদ্দিন , বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক, জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগে. জেনারেল (অবঃ) ডা. আব্দুল মালিকের কন্যা অধ্যাপক ডা. ফজিলাতুন্নেছা মালিক প্রমুখসহ তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামান।


আরও দেখুন: