বেগম রোকেয়া পদক পাচ্ছেন ডা. হালিদা হানুমসহ ৫ কৃতি নারী
বিশিষ্ট প্রজনন স্বাস্থ্য এপিডেমিওলজিস্ট ডা. হালিদা হানুম আখতার
নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য রোকেয়া পদক পাচ্ছেন বিশিষ্ট প্রজনন স্বাস্থ্য এপিডেমিওলজিস্ট ডা. হালিদা হানুম আখতারসহ ৫ নারী। বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবস ও বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন ও বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ প্রদান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানটি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ অনুষ্ঠানে ৫ জন বিশিষ্ট নারীকে বেগম রোকেয়া পদক প্রদান হবে। পদক প্রাপ্তরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পদক গ্রহণ করবেন। পদক প্রাপ্ত প্রত্যককে আঠারো ক্যারেট মানের পঁচিশ গ্রাম স্বর্ণ নির্মিত একটি পদক, পদকের রেপ্লিকা, চার লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হবে।
এক নজরে প্রজনন স্বাস্থ্য এপিডেমিওলজিস্ট ডা. হালিদা হানুম আখতার :
তাঁর রয়েছে প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে ৩০ বছরেরও বেশি আন্তর্জাতিক কাজের অভিজ্ঞতা। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি থেকে জনস্বাস্থ্যে ডক্টরেট লাভ করেন। বৈজ্ঞানিক গবেষণার পাশাপাশি প্রজনন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তিনি বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় প্রজনন স্বাস্থ্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (BIRPERHT) এর প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ছিলেন। বাংলাদেশের বৃহত্তম পরিবার পরিকল্পনা সংস্থার (FPAB) মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর গবেষণার মূল ক্ষেত্রগুলির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশে গর্ভনিরোধক কার্যকারিতা, প্রজনন স্বাস্থ্য চাহিদা এবং পরিষেবা, গর্ভপাত, এবং মাতৃত্বকালীন অসুস্থতা এবং মৃত্যুহার।
ডা. হালিদা হানুম আখতার জন্মেছেন রংপুরে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন।
১৯৬৯ সালে তিনি পরিবার পরিকল্পনা মোবাইল টিমের মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
১৯৭০ সালের অক্টোবর মাসে আমেরিকায় পৌঁছার পর সেখানে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু কোর্স করার ও প্রশিক্ষণের সুযোগ পান।
ডা. হালিদা হানুম আখতার বিভিন্ন সময়ে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, সোসাইটি ফর গ্রামীণ বাংলাদেশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারীদের কমিউনিটি ম্যাটারনিটি প্র্যাকটিশনার হিসেবে অসামান্য অবদান রেখেছেন।
চিকিৎসা ও কল্যাণকর কাজে অবদানের জন্য ২০২২ সালে জি-১০০ আজীবন সম্মাননা পান। ২০০৬ সালে জাতিসংঘের জনসংখ্যা পুরস্কারে ভূষিত হন।
নারী প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত 'জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অফ পাবলিক হেলথ' এর ইন্টারন্যাশনাল হেলথ ডিপার্টমেন্টের জ্যেষ্ঠ সহযোগী ড. হালিদা ছিলেন ইউএসএআইডি-ডিএফআইডির এনজিও স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্পের প্রধান। তিনি কাজ করেছেন পাথফাইন্ডার ইন্টারন্যাশনাল এর সিনিয়র কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে। গর্ভবতী নারীদের জন্য গর্ভকালীন সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে 'মাটির ব্যাংক' ডা. হালিদার চিন্তাপ্রসূত। বাংলাদেশে সূর্যের হাসি স্বাস্থ্যসেবায় তার ভূমিকা অনন্য।
ডা. হালিদা হানুম আখতার আরো যেসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন-
* ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এফপিএবি) ঢাকা, বাংলাদেশ মহাপরিচালক, ২০০৫-০৮।
* জনসংখ্যা ও উন্নয়নে অংশীদার (PPD), অংশীদার সচিবালয় ঢাকা, বাংলাদেশ সিনিয়র প্রজনন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।
* বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ ফর প্রমোশন অব এসেনশিয়াল অ্যান্ড রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ অ্যান্ড টেকনোলজি, বিআইআরপিএইচটি ঢাকা, বাংলাদেশ পরিচালক এবং প্রতিষ্ঠাতা।
* ২১ সেপ্টেম্বর, ২০০৯-এ প্রজনন স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনার জন্য গ্লোবাল টেকনিক্যাল লিড হিসাবে CHS-এ যোগদান করেন।
* এমসিএইচ প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেশন সেল ঢাকা, বাংলাদেশ প্রকল্প পরিচালক, ইত্যাদি।
এছাড়াও, প্রাতিষ্ঠানিক অভিজ্ঞতায় ডা. হালিদা হানুম আখতার বিভিন্ন বৃত্তিপ্রাপ্ত হয়েছেন।
* ড. পি.এইচ., জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি, স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ, বাল্টিমোর, মেরিল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ১৯৮১, জনসংখ্যার গতিবিদ্যা বিভাগ। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি দ্বারা প্রদত্ত বৃত্তি।
* এম. পি. এইচ, জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি, স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ, বাল্টিমোর, মেরিল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ১৯৭৯। দ্য পাথফাইন্ডার ফান্ড, বোস্টন থেকে বৃত্তি পুরস্কার।
* ই.আই.এস. অফিসার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি), আটলান্টা, জর্জিয়া, ইউএসএ, প্রজনন স্বাস্থ্য বিভাগে, জুলাই ১৯৮১ থেকে জুন ১৯৮৩। দুই বছরের জন্য রকফেলার ফেলোশিপ প্রদান করা হয়।