অপারেশন করে হিজরা বানাতেন ভুয়া চিকিৎসক হাদিউজ্জামান

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2023-11-28 12:05:03
অপারেশন করে হিজরা বানাতেন ভুয়া চিকিৎসক হাদিউজ্জামান

অপারেশন করে হিজরা বানাতেন ভুয়া চিকিৎসক হাদিউজ্জামান

চিকিৎসা বিদ্যার সনদ না থাকলেও ১২ বছরে তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তর করেছেন পাঁচ শতাধিক মানুষকে। এতে ভুয়া ডাক্তার হাদিউজ্জামানের আয় হয়েছে সাড়ে ৫ কোটি টাকা। গত ৭ নভেম্বর যশোর সদর থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এরআগে, ২৬ অক্টোবর থেকে পিবিআইয়ের গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকার ১৩ দিন পর নানা চেষ্টায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ইতোমধ্যে ভুয়া চিকিৎসক হাদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে মানব পাচার ও প্রতিরোধ আইন এবং বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইনে ঢাকার ধামরাই থানায় মামলা করা হয়েছে। এর আগেও একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন হাদি। ছয় মাস জেলে থেকে আবার শুরু করেন একই কাজ।

সূত্র : জাগোনিউজ২৪। 


প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ১২ বছর ধরে হাদিউজ্জামান হিজড়ায় রূপান্তরের কাজ করেন। প্রথমেত লিঙ্গের অপারেশনের জন্য নেন ৩০ হাজার টাকা করে। পরে সিলিকন ঝেল দিয়ে বক্ষের আকার পরিবর্তন করতে প্রতি জনের কাছ থেকে নিয়ে থাকেন ১ লাখ ৪০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে।

এসব কাজে তার আয় হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা। আয়ের টাকা দিয়ে তিনি করেছেন দুটি দুই তলা বাড়ি। কিনেছেন প্রায় ২০ লাখ টাকা দামের গাড়িও। গাড়িটি কখনো চালক চালান, কখনো নিজেই চালিয়ে বিভিন্ন স্থানে যান।


গ্রেফতারের পরই ঢাকায় গুলশানের নিকেতনে তারই গড়ে তোলা একটি সেন্টার থেকে রাশেদ আহম্মেদ নাছিম খান নামের আরেকজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা জেলা পিবিআই। সেন্টারটিতে তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তর করার নানা জিনিসপত্র আলামত হিসেবে পায় পুলিশ। সেগুলো জব্দ করে সেন্টারটি তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে।


এবার ধামরায় থানায় করা মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। অপারেশনের জন্য ব্যবহার করা ওষুধ ও মালামাল জব্দ করেছে পুলিশ। আর গ্রেফতারের পর গত ১২ নভেম্বর তার এসব অপকর্মের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে মো. হাদিউজ্জামান।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ভুয়া ডাক্তার মো. হাদিউজ্জামানের বাড়ি যশোরে। এইচএসসি পাশ করে ওষুধের দোকান দেন। এই সূত্রে পরিচয় হয় চিকিৎসকদের সঙ্গে। ২০১১ সালের দিকে যশোরের ফুলতলায় ফুলতলা সার্জিকেল ক্লিনিকে কাজ শুরু করেন। ক্লিনিকটিতে চিকিৎসকদের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন তিনি।

এরপর একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে শেখেন অপারেশনের কাজ। এরপর নিজেই অপারেশন করতে শুরু করেন। ২০১২ সালে ফুলতলা সার্জিকেল ক্লিনিকটি বন্ধ হয়ে গেলে ঢাকার ধামরাই থানা বাসস্ট্যান্ডে রোম-আমেরিকান নামক একটি হাসপাতালে যোগ দিয়ে শুরু করেন তৃতীয় লিঙ্গে রূপান্তরের কাজ।

এজন্য তৃতীয় লিঙ্গের ও তাদের গুরু মায়ের মাধ্যমে আসা মানুষকে প্রথমে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে বলতেন হাদিউজ্জামান। এরপর সাধারণ রোগীদের মতোই অজ্ঞান করে কেটে ফেলতেন পুরুষাঙ্গ। পরবর্তীতে বিভিন্ন হরমোনাল ইনজেকশন দিয়ে শারীরিক পরিবর্তন করতেন। কয়েক মাসের মধ্যেই পুরোপুরি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মতোই মানসিক ও দৈহিক পরিবর্তন ঘটতো। পাশাপাশি দারকি (ইমপ্লান্ড) দিয়ে করতেন বক্ষ ফোলানোর কাজ। 


আরও দেখুন: