ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যায় বিশ্বে অষ্টম বাংলাদেশ
জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে বাংলাদেশ অ্যান্ডোক্রাইন সোসাইটি (বিইএস) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন
দেশে বর্তমানে ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ মানুষ। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে অষ্টম। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে সোমবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন হলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশ অ্যান্ডোক্রাইন সোসাইটি (বিইএস)।
‘আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এবং করণীয় জানুন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বিইএসর সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, নিয়মিত শরীরচর্চা না করা এবং খাদ্যাভ্যাসের কারণে বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের হার দিন দিন বাড়ছে।
তিনি বলেন, অতিমাত্রায় শর্করা বা মিষ্টি জাতীয় খাদ্যগ্রহণের ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। শহরগুলোতে পর্যাপ্ত হাঁটার জায়গার (ওয়াকওয়ে) ব্যবস্থা করতে হবে শুধু মাঠ থাকলে হবে না। স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা ডায়াবেটিস ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই পাঠ্যক্রমে এর সচেতনার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ডায়াবেটিস প্রবণ দেশ এবং বাস্তব পরিস্থিতি অনেক গুরুতর। বর্তমানে শহর ও গ্রামে প্রায় সমানভাবে ডায়াবেটিসের রোগী বাড়ছে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে অবিলম্বে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন তারা।
তারা আরও বলেন, এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। সর্বস্তরের সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা এবং ডায়াবেটিক রোগীর সেবায় ন্যায্যমূল্যে ওষুধ সরবরাহ থেকে শুরু করে অন্যান্য সহযোগী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে তারা বলেন, দেশের ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ রোগী জানেই না তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। কারণ বেশিরভাগ রোগী নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করান না। তাই ডায়াবেটিস থাকুক বা না থাকুক সবাইকে বছরে অন্তত একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা জরুরি। পাশাপাশি খাবারে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে আমিষ ও শাক-সবজি জাতীয় খাবার বাড়ানো উচিত। এছাড়া স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, ফাস্টফুডসহ ক্ষতিকর খাবার পরিহার, নিয়মিত হাঁটা, খেলাধুলা করা প্রয়োজন। কেউ যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চিকিৎসা নেওয়া উচিত। আশঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে দেড় কোটি ছাড়াতে পারে দেশের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান চিকিৎসকরা।
সংবাদ সম্মেলনে বিইএসর প্রধান পৃষ্ঠপোষক অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক পাঠান, সভাপতি (নির্বাচিত) অধ্যাপক মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, সহ-সভাপতি ডা. ফারিয়া আফসানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ডা. আহসানুল হক আমিন, দপ্তর সম্পাদক ডা. মারুফা মোস্তারীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।