জরুরিভিত্তিতে ফিলিস্তিনে ওষুধ পাঠাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি
ইসরায়েল কর্তৃক ফিলিস্তিনের হাসপাতালে বোমা হামলায় হতাহত হাজারো অসুস্থ অসহায় মানুষকে চিকিৎসা সেবা ও জরুরি ঔষধ সামগ্রী পাঠাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপিকে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার ( ১৮ অক্টোবর) বিকেলে টেলিফোনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে এই নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন বিকেলে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি।
ফিলিস্তিনে ওষুধ সামগ্রী প্রেরণ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনের জনগণের কষ্ট বোঝেন, ইসরায়েলের হামলায় হতাহত নারী-শিশুদের বেদনা অনুভব করছেন তিনি তার নিজের জীবনের হতাহতের ক্ষত থেকে। শিশু রাসেলের হত্যায় কী বেদনা হয়েছে সেটি প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন। এজন্যই বিশ্ব পরাশক্তিদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ফিলিস্তিনের নিরিহ অসহায় মানুষের জন্য কথা বলছেন, তাদের চিকিৎসা সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সভায় উপস্থিত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলমকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানান এবং বলেন, আমরা অতি দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ফিলিস্তিনের আহত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে চাই। এক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ে ওষুধ সামগ্রী পাঠাতে আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে সম্ভব সব চেষ্টাই করতে হবে।
শেখ রাসেলের ষাটতম জন্মদিন উপলক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরো বলেন, "রাসেলের হত্যাকারী ঘাতকরা পৈশাচিক মানসিকতার মানুষ। তারা নিষ্ঠুর, ঘৃণ্য ও নিকৃষ্ট। পৃথিবীর অনেক দেশেই অনেক রাষ্ট্রপ্রধানদের হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু ইতিহাসের কোথাও সপরিবারে হত্যার নজির দেখা যায় নি। এই হত্যাকান্ড একটি প্রতিশোধের হত্যাকাণ্ড। ৭৫ ও ২১শে আগস্ট হত্যাকান্ডের হোতারা একই। এই হত্যাকান্ডে অবশ্যই জামাত-বিএনপি'র পূর্বসূরিদের হাত ছিল। কারন, জামাত-বিএনপি'র পূর্বসূরিদের স্বার্থই স্পষ্ট হয়েছে এই হত্যাকান্ডের মাধ্যমে।"
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরো বলেন, "১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করা কেবলই একটি নিছক হত্যাকাণ্ড নয়, এটি ছিল জাতির ভবিষ্যত মেরুদণ্ডকে ভেঙে দিতে একটি পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞ। মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিতদের পরাজয়ের শোধ নিতে অত্যন্ত ঘৃণ্য ও ধিকৃত উপায়ে কাপুরুষোচিত উপায়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল। হত্যাকারী ঘাতকরা কেবল জাতির পিতা এবং নারীদের হত্যা করেই থামেনি। হত্যাকাণ্ডের দিন ছোট্ট শিশু রাসেল যখন মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিল তখন ঘাতকরা সেই ছোট্ট শিশু রাসেলকে অত্যন্ত নির্মমভাবে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় খুন করে। সেদিন কেন শিশু রাসেলকে হত্যা করতে হয়েছিল? কী দোষ ছিল ছোট্ট এই শিশুর? এটি কোন সভ্য মানুষের কাজ হতে পারে না। ঘাতকরা ছিল অত্যন্ত পৈশাচিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তারা নিষ্ঠুর ও পৈশাচিক ছিল বলেই তারা এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল এবং রাসেলের মত এত ফুটফুটে ছোট্ট শিশুকেও হত্যা করতে তারা পিছুপা হয়নি।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং যুগ্মসচিববৃন্দ।
সভায় দেশের আগামী শিশুদের রাসেলের মত করে গড়ে তুলতে হবে বলে অভিমত ব্যাক্ত করেন বক্তারা।
স্বাক্ষরিত/-
মাইদুল ইসলাম প্রধান
জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা,
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়,
বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা।