বিদেশ থেকে আনা হয়েছে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ও অক্সিজেন জেনারেটর: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশ থেকে আনা হয়েছে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ও অক্সিজেন জেনারেটর। সময়মতো অক্সিজেন দেওয়ার কারণে করোনায় আমাদের রোগী কম মারা গেছে।’
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) মেডিকেল গ্যাস সিস্টেম প্রতিস্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামত বিষয়ক গাইডলাইন এবং এসওপিসমূহের মোড়ক উন্মোচন ও অবহিতকরণ সভার আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ ও ইউনিসেফ। রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ পরামর্শ দেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিরোধে হাসপাতালে অক্সিজেন ব্যবহারের গাইডলাইন জানা দরকার। হাসপাতালের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের নিয়মিত ফায়ার ড্রিল করা উচিত, পাশাপাশি যন্ত্রপাতিগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। তাহলে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে। প্রিভেনশন ইজ বেটার দেন কিউর।’
হাসপাতালে অগ্নি দুর্ঘটনা এড়াতে দায়িত্বরতদের নিয়মিত যন্ত্রপাতি পরীক্ষা ও ফায়ার ড্রিল করার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রোগীর প্রয়োজনে অক্সিজেন সবসময় প্রস্তুত রাখতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসা সেবায় বেশকিছু গ্যাসের প্রয়োজন হয়। সেগুলোর মধ্যে অক্সিজেন হলো অন্যতম। রোগীদের সঠিক চিকিৎসার জন্য সব সময় অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। করোনার সময় আমরা দেখেছি, অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের আগে দৈনিক ৭০-৮০ টন অক্সিজেন প্রয়োজন হতো। করোনার সময় তা বাড়তে বাড়তে ৩০০ টন ছাড়িয়ে যায়, কিন্তু তখন আমাদের অক্সিজেন তৈরির সক্ষমতা ছিল ১০০ টনের মতো। অক্সিজেনের লিকুইড প্ল্যান্ট বসানো হয়েছে। ১০০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের লাইন দেওয়া হয়েছে।
অক্সিজেন ব্যবহারে গাইডলাইনের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসা সেবায় অক্সিজেন যেমন প্রয়োজন, তেমনি এটি সংবেদনশীলও। কারণ অক্সিজেন ছাড়া মানুষ এক মিনিটও বাঁচতে পারে না। আবার এটির সিস্টেম যদি ভালো না হয় বা মিসইউজ হয়, অক্সিজেনের ফ্লো বাড়ে কমে, তাহলে মানুষ মারা যাবে। অক্সিজেন সবসময় সঠিক অনুপাতে রাখতে হবে। লাইনে লিকেজ হলে স্পার্কের মাধ্যমে আগুন ধরে যেতে পারে। কাজেই অক্সিজেন ব্যবহারে গাইডলাইন জানা জরুরি।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘মেশিনারি ব্যবহার করলে সেটির গাইডলাইন থাকতে হবে। কারণ যারা রোগীদের চিকিৎসা দেবেন, ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ান, তাদেরও সুরক্ষা দরকার, হাসপাতালের সুরক্ষা দরকার। যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। এজন্য গাইডলাইন দরকার। পাশাপাশি এই গাইডলাইন অনুযায়ী চলা, এই গাইডলাইন পড়া, ট্রেইনিং করানোও দরকার।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ও সিডিসির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়ট।
অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘অক্সিজেন একটি তালিকাভুক্ত চিকিৎসা পণ্য। সেইসঙ্গে বিস্ফোরক পদার্থ হিসেবেও পরিচিত। তাই অক্সিজেন উৎপাদন থেকে শুরু করে ব্যবহার, সব পর্যায়ে এর নিরাপত্তা বিধান, কোনো দুর্ঘটনা বা অযৌক্তিক ব্যবহার থেকে সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া অত্যাবশ্যক।’
অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘চিকিৎসা খাতে অক্সিজেনের ভূমিকা অপরিসীম। কিন্তু যথাযথ ব্যবহারের অভাবে এটি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তাই মেডিকেল গ্যাস সিস্টেম প্রতিস্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামতবিষয়ক গাইডলাইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যারা এই গাইডলাইন তৈরি করেছেন তাদের ধন্যবাদ।’