চিকিৎসা বিলম্বে মানসিক রোগ চরমমাত্রা ধারণ করতে পারে
ঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বহির্বিভাগে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত
দেশে মানসিক রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসা শুরু হতে গড় বিলম্ব হয়ে থাকে ২৪ থেকে ৩৬ মাস। চিকিৎসায় বিলম্বজনিত কারণে মানসিক রোগ চরমমাত্রা ধারণ করতে পারে এবং রোগীরা ভোগান্তির শিকার হয়ে থাকেন।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বহির্বিভাগে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন শীর্ষক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বিশেষজ্ঞ আলোচকেরা উপরোক্ত কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত সেমিনারটি আয়োজন করে মনোরোগ বিদ্যা বিভাগ।
সেমিনারে বলা হয়, মানসিক রোগীদের চিকিৎসা গ্যাপ রয়েছে। মানসিক রোগীর চিকিৎসা প্রয়োজন এবং যারা চিকিৎসা পাচ্ছেন বা নিচ্ছেন, তাদের মধ্যেও ব্যবধান রয়েছে। মানসিক রোগীদের মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্কদের চিকিৎসা গ্যাপ ৯২% এবং শিশু কিশোদের ক্ষেত্রে ৯৪.৩%। এরা চিকিৎসার আওতায় আসছে না। মানসিক রোগীরা প্রথমাবস্থায় মনোরোগের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয় না। মানসিক রোগ সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব, সচেতনতার অভাব, ভ্রান্ত ধারণা, সঠিত রেফারেল সিস্টেমের অভাবে- এমনটা হয়ে থাকে। হাসপাতাল বহির্বিভাগে এ ধরনের রোগী এলে সঠিক নির্দেশিকা না থাকায় পর্যাপ্তভাবে এ রোগ চিহ্নিত হয় না। ফলে তারা এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে ঘুরতে থাকেন।
সেমিনারে মানসিক রোগের চিকিৎসায় কিছু পদক্ষেপ গ্রহণে প্রস্তাবনা উত্থাপিত হয়। তার মধ্যে বর্হিবিভাগে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রাথমিক লক্ষ্মণ সম্বলিত ব্যানার স্থাপন, টিকিট বন্টনকর্মীদের সাথে আলোচনা এবং প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসকদের মাধ্যমে Patient sorting room / screening corner চালু করার প্রস্তাবও উত্থাপিত হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসএমএমইউর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সমস্যা আছে, তার সমাধানও আছে। মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের ফেজ এ ও ফেজ বি রেসিডেন্টদের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে এ ধরনের রোগী সনাক্ত করতে হবে। এছাড়াও যেসব রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় সমস্যা পাওয়া যাবে না, তাদের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগে রেফার্ড করতে হবে। বিএসএমএমইউর রিসিপশন থেকে রেসিডেন্টদের দিয়ে রোগী স্ক্রিনিং করে টোকেন দিয়ে রোগীদের মাঝে টিকিট বিতরণ করা হবে। বহির্বিভাগে মনোরোগ বিদ্যাসহ সকল বিভাগের টিকিট বন্টন আধুনিকায়নের আশ্বাস দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নাহিদ মাহজাবিন মোরশেদ।
সেমিনারে পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রি. জে. ডা. রেজার রহমান, ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজলকৃষ্ণ ব্যানার্জী, বিএসএমএমইউর মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, বিএসএমএমইউর মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. এমএম এ সালাহ্উদ্দিন কাউসার, অধ্যাপক ডা. সুলতানা আলগিনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের ফেজ বি রেসিডেন্ট ডা. নাহিদ আফসানা জামান।