রাঙামাটিতে ডায়রিয়ায় আরও দুজনের মৃত্যু

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2023-06-17 13:33:32
রাঙামাটিতে ডায়রিয়ায় আরও দুজনের মৃত্যু

ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে

প্রচণ্ড গরম ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে ১০ দিনের ব্যবধানে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম লংথিয়ানপাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বাহন ত্রিপুরা (৫৫) ও মেলাতি ত্রিপুরা (৫০) মারা গেছেন।

শুক্রবার রাত ৩টার দিকে এ দম্পতির মৃত্যু হয়। তাদের বাড়ি সাজেকের বেটলিংয়ে। তারা লংথিয়ানপাড়ায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত মেয়ের জামাইকে দেখতে এসেছিলেন।

এর আগে গত ৭ জুন বুধবার ভোরে গবতি বালা ত্রিপুরা (৫০) ও দরুং ত্রিপুরার (৬০) মৃত্যু হয়। এ নিয়ে গত ১৫ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাজেকে চারজন মৃত্যুবরণ করেন।

লংথিয়ানপাড়া ও এর আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ আরও অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।

সাজেক ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার বনবিহারী চাকমা জানান, গত এক মাস ধরে সাজেকের লংথিয়ানপাড়া, অরুণপাড়া, কাইজাপাড়া, রায়নাপাড়া ও শিয়ালদহ বেটলিং এলাকাসহ আশপাশের বেশ কিছু এলাকায় নতুন করে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এলাকার আশপাশে কোনো হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় স্থানীয় তান্ত্রিক দ্বারা চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এলাকায় যাতায়াতের সড়কযোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকায় হেঁটে এত দূর থেকে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে রোগী পাঠানো সম্ভব নয়।

গণমাধ্যমে ডায়রিয়ার খবর প্রকাশের পর ৮ জুন বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও উপজেলা প্রশাসনের তিনটি মেডিকেল টিম পাঠিয়ে টানা এক সপ্তাহব্যাপী চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে গত ১৪ জুন মেডিকেল টিম ফিরে আসে। এর মধ্যেই নতুন করে আরও দুজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হলো।

সাজেক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জোপুইথাং ত্রিপুরা জানান, লংথিয়ানপাড়ায় চারজন মুমূর্ষু ডায়রিয়া রোগী রয়েছেন। তাদের অবস্থাও ভালো নয়। মূলত ছড়ার পানি থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। ২০১৬ সালে এখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ছয়জন মৃত্যুবরণ করেছেন। পরে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে মেডিকেল টিম দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসায় ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে আনে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুমানা আক্তার ডায়রিয়ায় মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে জানান, সাজেকের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নেই, পাহাড়ি ছড়ার পানি পান করায় বর্ষার শুরুতে এই সমস্যা দেখা দেয়। আমরা ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় চেষ্টা করছি সাজেকের দুর্গম অঞ্চলে প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন সমস্যা দূর করতে।

এ ছাড়া সাজেকে ডায়রিয়া প্রতিরোধে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের সাহায্যে সেনাবাহিনী বিজিবি ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা সম্মিলিত চিকিৎসা সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও শুকনো খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।


আরও দেখুন: