মাত্র দু’হাজার টাকায় চোখের ছানি অপারেশন
মাত্র দু’হাজার টাকায় চোখের ছানি অপারেশন বগুড়ার ইব্রাহীম আই কেয়ার সেন্টারে
মাত্র দু’হাজার টাকায় চোখের ছানি অপারেশন বগুড়ার ইব্রাহীম আই কেয়ার সেন্টারে!
শহরের পিটিআই মোড়ে অবস্থিত। কম টাকা নিলেও সেবার মানে কোন ঘাটতি নেই বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইবরাহীম হোসেন।
তিনি জানান, সাধারণ রোগীদের কাছ ছানি অপারেশনের জন্য মাত্র ২ হাজার টাকা নেয়া হয়। এই প্যাকেজের আওতায় রোগীর অপারেশন, আনুষঙ্গিক ওষুধ, হাসপাতালের বেড ভাড়া ও রোগীর যাতায়াত সুবিধা দিয়ে থাকে ইব্রাহীম আই কেয়ার সেন্টার!
ডা. ইব্রাহীম জানান, কম খচরে সেবা দেয়ার পাশাপাশি অতি দরিদ্র লোকদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে অপারেশন সুবিধা দিয়ে থাকেন।
কম টাকা বা বিনা টাকায় সেবার অবারিত সুযোগ থাকলে মান-সম্মত চিকিৎসা-সেবা নিশ্চিত করতে কোন কার্পণ্য করা হয় না।
কারণ এসব রোগীদের কাছ থেকে নূনতম খরচটা নেয়া হয়। ডা. ইব্রাহীম নিজেই একজন চক্ষু সার্জন। সে জন্য, হাসপাতালের স্টাফদের বেতন-ভাতাসহ আনুষঙ্গিক খরচটা যোগ করেই এই টাকা নেয়া হয়ে থাকে। তবে, অবস্থাপন্ন রোগীদের কাছ থেকে অন্য হাসপাতালের মতই স্বাভাবিক খরচ নেয়া হয়।
বগুড়া এবং আশপাশের জেলাগুলোর মানুষকে তিনি এসব সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
রোগীরা যে কেউই হাসপাতালে এসে এই সুবিধা নিতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে ফ্রি চক্ষু ক্যাম্পের মাধ্যমে রোগী বাছাই করে থাকেন। বাছাইকৃত রোগীদের
সেখান থেকে রোগী বাছাই রোগীদের
২০১৪ সালে যাত্রা শুরু ইব্রাহিম আই কেয়ার সেন্টারের। ২০১৬ সাল থেকে রোগীদের বিশেষ ছাড়ে / নামমাত্র খরচে সেবা দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এই ক’বছরে এখন পর্যন্ত ২২ হাজার রোগীর চোখের ছানি অপারেশন হয়েছে।
….
পড়ালেখা করে ডাক্তার হয়ে মানব সেবা করার স্বপ্নটা ছোটবেলার। ডাক্তার হওয়ার পর সেটাকেই ধরে রেখেছি। আমি যেহেতু চক্ষু বিশেষজ্ঞ। আমাদের দেশে চোখের সমস্যায় ভুগা অনেক রোগী রয়েছেন। তাদের অকেকেই চিকিৎসাযোগ্য অন্ধত্বের শিকার। এদের অনেকেই টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। অন্ধ হওয়ায় অন্যের সাহায্যে আশায় থাকতে হয়। নিজের কাজ করতে পারেন না। বাথরুম-গোসল-খাওয়া সবকিছুই পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েন। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তারা চোখের স্বাভাবিক দৃষ্টি ফিরে পেতে পারেন।
এসব অসহায় মানুষদের স্বাভাবিক জীবনের আনন্দ ফেরাতেই
মাত্র দুহাজার টাকায় চোখের ছানি অপারেশন করানোর ঘোষণা দেই। যার ফলশ্রুতিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ২২ হাজার মানুষকে এই সেবা দিতে পেরেছি ইব্রাহীম আই কেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে। এদের প্রায় ৭৫ ভাগ রোগী ২ হাজার টাকার প্যাকেজে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। প্রায় ৫শ’ রোগীকে সম্পূর্ণ বিনা খরচে সমমানের চিকিৎসা সেবা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
হাসপাতালটিতে ৩ ক্যাটাগরির চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হচ্ছে। তবে, মানের ক্ষেত্রে কোন হেরফের করা হয় না। এরমধ্যে স্বচ্ছল রোগীরা লেন্সসহ সংশ্লিষ্ট সব চিকিৎসা সরঞ্জাম অধিক দামেরটা পছন্দ করেন। এ জন্য তাদের খরচাটাও বেশি হয়ে থাকে। তাছাড়া দরিদ্র ও সাধারণ রোগীদের ক্ষেত্রে সার্জারি ফি প্রায় মওকুফ করা হয়। যেটা স্বচ্ছল রোগীরা পান না। এজন্য তাদের নির্দিষ্ট হারে বাড়তি টাকা বিল করা হয়।
২০১৪ সালে ধুনট থেকে চক্ষু সেন্টারের যাত্রা শুরু। ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত জেলার শেরপুরে স্থানান্তর। এরপর ২০১৮ থেকে এখন পর্যন্ত বগুড়া শহরের পিটিআই মোড়ে চলছে ইব্রাহীম আই কেয়ার সেন্টারের কার্যক্রম!
স্থানান্তর করা হয়। ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার চক্ষুরোগী সেবা পান। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত আরও প্রায় ২ হাজার রোগীর ছনি অপারেশন হয়েছে।
সাারণত: রোগীদেরকে সেন্টারের গাড়িতে করেই নিয়ে আসা হয়। রাতের বেলা অপারেশন হয়। পরদিন সকালে আবার গাড়িতে করে ফেরত পাঠানো হয়। যদি কোথাও গাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা না থাকে, সেক্ষেত্রে রোগীকে বাস ভাড়া দেয়া হয়। বগুড়া ও তার পারপাশের জেলাগুলো অর্থাৎ, গাইবান্ধা, জয়পুরহাট, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোরের রোগীদেরকে এই সুবিধা দিয়ে থাকে ইব্রাহীম আই কেয়ার সেন্টার।