ফ্যাটি লিভার চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ সহজ : অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইজাজুল হক
ফ্যাটি লিভার চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ সহজ : অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইজাজুল হক
নিয়ন্ত্রণহীন জীবনযাপন ও অনিরাপদ খাদ্যাভ্যাসে ফ্যাটি লিভার হয়ে থাকে। এ রোগের সঠিক ওষুধ আবিষ্কার না হওয়ায় চিকিৎসা বেশ জটিল। তবে চাইলেই ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
শুক্রবার (৯ জুন) আন্তর্জাতিক ন্যাশ ডে উপলক্ষে ডক্টর টিভিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন বিশিষ্ট লিভাররোগ বিশেষজ্ঞ ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল অধ্যাপক মোহাম্মদ ইজাজুল হক।
তিনি বলেন, শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাবার অতিরিক্ত খেলে, তা আমাদের দেহ পুরোপুরি শোষণ করতে পারে না। সেগুলো লিভারের কোষে গিয়ে জমা হতে থাকে। এভাবে ৫ শতাংশ চর্বি জমা হলেই তাকে ফ্যাটি লিভার বলা হয়ে থাকে। এভাবে ধারাবাহিকভাবে জমা হতে হতে লিভার কোষকে নষ্ট করে দেয়। এক পর্যায়ে লিভার প্রদাহের সৃষ্টি হয়। এই পর্যায়কে ন্যাশ বলে। দীর্ঘমেয়াদী ন্যাশ থেকে লিভার সিরোসিস হয়ে যায়। পরে তা লিভার ক্যান্সারে রূপ নেয়।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইজাজুল হক বলেন, এছাড়াও বেশকিছু রোগ থেকেও লিভারের এই রোগ হতে পারে। অতিরিক্ত মেদ-ভুঁড়ি, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত চর্বি, হাইপারটেনশন বা অতিরিক্ত রক্তচাপ, হাইপোথাইরয়েডিজম আর মহিলাদের পলিসিস্টিক ওভারি।
ধারণা করা হয়, বাংলাদেশে প্রায় ৩০ শতাংশ বা সাড়ে চার কোটি মানুষ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। এদের মধ্যে ৩৬ থেকে ৫৪ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত অস্বাস্থ্যকর খাবারজনিত লিভারের রোগ বা নন-অ্যালকোহলিক স্টিয়েটোহেপাটাইটিসে (ন্যাশ)।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইজাজুল হক বলেন, এখন পর্যন্ত ফ্যাটি লিভার তথা ন্যাশের চিকিৎসায় সঠিক ওষুধ আবিষ্কার হয়নি। পরীক্ষামূলকভাবে কিছু ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এটা প্রতিরোধে সঠিক নিয়মে, প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। শর্করা জাতীয় খাবার কম গ্রহণ করতে হবে। শাকসবজি বেশি খেতে হবে।
তাঁর মতে, ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। ফ্যাটি লিভারের সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা ‘লাইফ স্টাইল মডিফিকেশন’ বা ‘জীবনযাত্রার পরিবর্তন’। অতিরিক্ত শর্করা আর চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে। ব্যায়াম করতে হবে। এ ছাড়া যে সব রোগের কারণে লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে, তার সঠিক চিকিৎসা করতে হবে। সর্বোপরি সবাইকে সচেতন হয়ে ফ্যাটি লিভার বা ন্যাশ প্রতিরোধ করার পরামর্শ দেন লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ইজাজুল হক।