পরিবেশ দূষণে রোগব্যাধী বাড়ছে: অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন

ইলিয়াস হোসেন :
2023-06-05 15:40:05
পরিবেশ দূষণে রোগব্যাধী বাড়ছে: অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন

পরিবেশ দূষণে রোগব্যাধীও বাড়ছে: অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন

পরিবেশ দূষণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগব্যাধীর প্রকোপ বাড়ছে। জন্ম নিচ্ছে নতুন নতুন রোগ। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ডক্টর টিভির সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান দেশের শীর্ষস্থানীয় মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও টিএমএসএস মেডিকেলে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন। 

তিনি বলেন, পরিবেশের সাথে মানুষের সুস্থতা অতপ্রোতভাবে জড়িত। সুন্দর ও সুস্থ্য পরিবেশে মানুষ যেমন  ভাল থাকে। তার মানসিক ও শারীরিক সুস্থততা অটুট থাকে। তেমনি দূষিত পরিবেশে মানুষ সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে,  দিন দিন পরিবেশ দূষণ বেড়েই চলেছে। দূষষ শুধু বায়ু,পানিতেই সীমাবদ্ধ নয়। এটা মিশে গেছে আমাদের খাবারের সাথে।

অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন বলেন, সূর্যের প্রখরতা বাড়ছে। তাপমাত্রা এখন ৪২ ডিগ্রিতে উঠে গেছে। তাপমাত্রা বাড়ায় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে পড়েছে। জন্ম নিচ্ছে নতুন নতুন ভাইরাস। রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। শিশু-বৃদ্ধ নানা বয়সী মানুষের দেহে বিভিন্ন রকমের ইনফেকশন দেখা দিচ্ছে। ঔষধেও তেমন একটা কাজ হচ্ছে না। 

প্রচন্ড গরমে তীব্র ঘাম হচ্ছে। গরমে বাড়ছে হিটস্ট্রোক রোগী। ঘাম জমে ঠান্ডা লেগে নিউমোনিয়া হচ্ছে। ডায়রিয়া, জন্ডিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এই ধরনের রোগী দিয়ে হাসপাতালের ওয়ার্ড ভরপুর।  

তামাকের ধোঁয়া বাতাসে ছড়িয়ে পড়ায় অধূমপায়ীরাও রোগব্যাধীতে আক্রান্ত হতে পারেন। ধূমপায়ীদের মত তারাও ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। 

ধুলাবালিতে থাকার কারণে মানুষের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বাড়ছে।  

অনেকে বিভিন্ন জলাশয়ের পানি পান করেন। রান্নার কাজেও ব্যবহার করে থাকেন। আবার গোসল, কাপড় কাঁচা এবং গবাদি পশুকেও গোসল করান। এতে পানি দূষিত হয়। এতে বিভিন্ন চর্মরোগ ও পেটের সমস্যা দেখা দেয়। 

সোয়াইন ফ্লু, হাম, গুটি বসন্ত, যক্ষ্মা, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি বায়ুবাহিত রোগ। রোগীর হাঁচি-কাশি বা কথাবার্তা বলার মাধ্যমে এ রোগ ছড়াতে পারে।

ডায়রিয়া, কলেরা, জন্ডিস, আমাশয় এবং টাইফয়েড ইত্যাদির মতো পানিবাহিত রোগগুলো খুব দ্রুত দূষিত পানির মাধ্যমে সংক্রামিত হয়।

দূষিত খাদ্য গ্রহণ এবং দূষিত পানি পান করার মাধ্যমে নানা রকম সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে।

পরিবেশ দূষণের কারণেই এডিস মশার জন্ম হচ্ছে। ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী ডেঙ্গুজ্বর। গামলা, টায়ার ইত্যাদিতে পানি জমে নানাজাতের বিষাক্ত মশার জন্ম হয়। মশার কামড় থেকে ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা দেয়। জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়ার বাহক মশা ডিম পাড়ে। এগুলো না থাকলে বাহক মশা ডিম পাড়তে পারবে না। ফলে আমরা ওইসব রোগে আক্রান্ত হবো না।

জনমানুষের সুস্থততার পরিবেশ দূষণ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকার ও রাষ্ট্রকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। সর্বোপরি, দূষণ সম্পর্কে জনচেতনতা বাড়াতে বলেন তিনি।  এরফলে মানুষেরা অনেক রোগব্যাধী থেকে রক্ষা পাবে বলে জানান মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা, জাকির হোসেন। 


আরও দেখুন: