ডা. ফারুকীর মৃত্যুতে ভার্চুয়াল জগতে শোকের ছায়া
ডা. সাজেদুর রহমান ফারুকীর স্মৃতিচারণ করে ফেসবুকে নানা স্ট্যাটাস দিচ্ছেন তার সহকর্মী ও ছাত্র-ছাত্রীরা
কাটা হাত জোড়া লাগানোর কারিগরখ্যাত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকীর মৃত্যুতে ভার্চুয়াল জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জনস্বাস্থ্য পুষ্টি ইন্সটিটিউটের বিভাগীয় প্রধান ডা. জয়নাল আবেদীন টিটো তার ফেসবুক টাইমলাইনে লেখেন, বিশিষ্ট হ্যান্ড সার্জন, কর্তিত হাত জোড়া লাগানোর কারিগর ডা. সাজেদুর রহমান ফারুকীর মৃ্ত্যুতে রিকনস্ট্রাকশন সার্জারির ক্ষেত্রে বড় একটা ক্ষতি হয়ে গেল ।
নিটোরের চিকিৎসক ডা. মাইনুল ইসলাম লেখেন, স্যারের মত মানুষ পৃথিবীতে খুব কম ছিল।
রাজধানীর আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজের অপথালমোলজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ডা. জাকিয়া সুলতানা শাহিদ বলেন, ডা. সাজেদুর রহমান ফারুকীর মতো দেশবরেণ্য চিকিৎসকের মৃত্যু খুবই হৃদয়বিদারক। এত তাড়াতাড়ি তিনি চলে গেলেন। দেশ একজন বড় চিকিৎসক হারালো। কত মানুষের হাত জোড়া লাগিয়ে দিয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নাই। বিখ্যাত হ্যেন্ড রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জেন্ট ছিলেন তিনি। মানুষের জন্য ভালোবাসার অন্তঃপ্রাণ।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজের চিকিৎসক ডা. নির্মল কান্তি দে বলেন, তিনি আমার সহকর্মী ছিলেন। আমি যখন এ দুঃসংবাদটি শোনে খুব কষ্ট পেলাম। সৃষ্টিকর্তা তার আত্মাকে শান্তিতে রাখুন।
ডা. সাজেদুর রহমান ফারুকীর স্মৃতিচারণ করে কুমিল্লা মেডিকেলের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. আবদুল্লাহ আল রাফি তার ফেসবুক টাইমলাইনে লেখেন, হ্যান্ড এন্ড রিকন্সট্রাক্টিভ সার্জারীর পথিকৃৎ আমাদের শিক্ষক ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকী । আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি , অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ ছিলেন।
একবার আমার এক Stage II Kienbock disease এর রোগীকে আমি Radial wedge osteotomy এর plan দিই। কিন্তু রোগী আমার অধীনে ভর্তি না হয়ে ঢাকাতে ফারুকী স্যারের কাছে পরামর্শের জন্যে যান। স্যারও radial wedge osteotomy এর কথা বলেন। কিন্তু তিনি আমার প্রেশক্রিপশন দেখে রোগীকে বলেন আপনি কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসছেন কেন? ওখানেই অপারেশন করান। ঢাকায় করলে খরচ বেশি হবে তাছাড়া আপনি যাকে দেখিয়েছেন উনি ভাল ডাক্তার৷ রোগী পরে আমার কাছে এসে এই ঘটনা বর্ণনা করে বলেন স্যার আপনার অনেক প্রশংসা করেছেন, আর বলেছেন আপনার কাছে অপারেশন করাতে। একজন সার্জন হিসাবে এই ঘটনা থেকে আমি সহজেই বুঝতে পারি স্যার কতটা নির্লোভ ও অমায়িক ছিলেন। স্যারের কাছে অনেক রোগী রেফার করেছি। কিন্তু ওই রোগীটা নিজে থেকেই স্যারের কাছে গিয়েছিলেন। স্যার চাইলেই নিজে অপারেশন করতে পারতেন। এই ঘটনা থেকে আমাদের অনেক সার্জনদের অনেক কিছুই শিক্ষার আছে।
ফারুক আহমেদ নামের একজন ফেসবুক টাইমলাইনে লেখেন, ডা,সাজেদুর রেজা ফারুকী স্যারের সংবাদটা শুনে ভিতরটা কেঁপে উঠল, ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে স্যার নেই। এমন সার্জনদের শূন্যতা কখনো পূরণ হয় না।কিছুদিন আগেও স্যারের সাথে কথা হল, কোরবানির পর আমার ভাগিনার অপারেশন করবে। স্যার আজ নেই।