কাটা হাত জোড়া দেওয়ার কারিগর ডা. সাজেদুর আর নেই
সহকর্মীদের সঙ্গে ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকী (বসা)
ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন কাটা হাত জোড়া লাগানোর কারিগরখ্যাত জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকী (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
রবিবার (৪ জুন) সকালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর।
ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকী নিটোরের হ্যান্ড অ্যান্ড মাইক্রোসার্জারি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। তিনি নিজ খরচে দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং কঠোর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে অর্জিত দক্ষতায় গত ২০ বছর ধরে স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে এ রকম বহু জটিল অস্ত্রোপচারে দেখেছেন সাফল্যের মুখ। দলগতভাবে করোনা-ডেঙ্গুর মতো দুর্যোগেও অব্যাহত রাখেন স্বাস্থ্যসেবা।
এর আগে ১৭ মে রাজধানীর একটি হাসপাতালে টানা ১১ ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চট্টগ্রামে লোহাগাড়ায় দায়ের কোপে বিচ্ছিন্ন পুলিশ কনস্টেবল জনি খানের (২৮) কবজি জোড়া লাগিয়ে আলোচনায় আসেন ডা. সাজেদ রেজা ফারুকী।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার দেহুন্দা গ্রামের সন্তান ডা. সাজেদুর রহমান ফারুকীর জন্ম ১৯৬৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর, কুষ্টিয়ায় নানা বাড়িতে।
তিনি আইডিয়াল স্কুল থেকে ১৯৮৪ সালে এসএসসি এবং ১৯৮৬ সালে রাজধানীর নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে। সেখান থেকে ১৯৯৩ সনে এমবিবিএস পাস করেন।
ডা. সাজেদুর রহমান ফারুকী জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) থেকে অর্থোপেডিকসে এমএস করেন। পরে তিনি ভারতের গঙ্গা ও বুম্বে হাসপাতাল এবং সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন।
তার বাবা ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাটমিক অ্যানার্জি কমিশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। ইংল্যান্ডে পিএইচডি পড়াকালীন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষ নেন দেশের এই প্রথম জিওফিজিস্ট (ভূগোল-পদার্থ বিদ্যায় বিশেষজ্ঞ)।