প্রাক-মৌসুমেই কয়েক গুণ বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী

ডক্টর টিভি রিপোর্ট
2023-05-28 16:16:18
প্রাক-মৌসুমেই কয়েক গুণ বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী

মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা না যায়, পুরোপুরি মৌসুম শুরু হলে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হতে পারে

প্রাক–মৌসুমে ডেঙ্গু রোগী কয়েক গুন বেড়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সরকারি সংস্থাটির মতে, মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা না হয়, পুরোপুরি মৌসুম শুরু হয়ে গেলে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হতে পারে।

রবিবার (২৮ মে) সকালে রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এসব তথ্য তুলে ধরেন অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর সিডিসি (কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল) অধ্যাপক মো. নাজমুল ইসলাম।

সেখানে বলা হয়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ মে পর্যন্ত কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে ১ হাজার ৬৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। আর স্থানীয় ৪২৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। জেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। রোহিঙ্গা বাদে সারা দেশে চলতি বছর ১ হাজার ৫৩৩ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। তার মধ্যে ঢাকা মহানগরে ৯৭১ এবং ঢাকা মহানগরের বাইরে ৫৬২ জন।

নাজমুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গত বছর সেখানে ১৭ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এ বছরও সেখানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অত্যন্ত বেশি। কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে রোগীর সংখ্যা উপেক্ষা করার মতো নয়।

রোহিঙ্গা শিবিরের এ অবস্থা কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা সীমিত জায়গায় থাকে। সেখানে পানি সরবরাহ না থাকায় পানি জমা করে রাখতে হয়। জমা করে রাখা পরিষ্কার পানি এডিস মশা প্রজননের জন্য ভালো জায়গা।

রোহিঙ্গা শিবিরে সাধারণ মানুষের চলাফেরা সীমিত থাকাকে কারণ হিসেবে দেখছেন নাজমুল ইসলাম। স্বাস্থ্যকর্মীদের বিধিনিষেধের মধ্যে কাজ করার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা দিবারাত্রি কাজ করছেন। তারপরও মনে রাখতে হবে, মশার প্রজননক্ষেত্র যদি ধ্বংস করা না যায়, পুরোপুরি মৌসুম শুরু হয়ে গেলে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হতে পারে।’

ঢাকা মহানগর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জনবসতি যেখানে বেশি, সেখানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তার মতে, উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটিতেই ডেঙ্গু রোগী আছে। এর কারণ হিসেবে ডা. নাজমুল বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তুলনায় দক্ষিণে গৃহায়ণ পরিকল্পিতভাবে হয়নি। বড় হাসপাতালগুলো ঢাকা দক্ষিণে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, সবচেয়ে কম রোগী রংপুর, সিলেট, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগে। আর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী ঢাকার পর চট্টগ্রাম বিভাগে, তারপর বরিশাল বিভাগে। অর্থাৎ, পুরো বাংলাদেশে রোগী পাওয়া যাচ্ছে। মূলত, রোগীর চাপ ঢাকা মহানগরে।

এ বছর জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ১৩ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এটি অত্যন্ত বেদনার বলেছে তারা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪৬ জন। তার মধ্যে ঢাকা মহানগরে ৪১ ও ঢাকার বাইরে ৫ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক আহমেদুল কবির, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক রাশেদা ইসলাম, লাইন ডিরেক্টর (এনসিডিসি) অধ্যাপক মো. রোবেদ আমিন, অধ্যাপক কাজী তারিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।


আরও দেখুন: