প্রথম ৫ মাসেই ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে ৩৬০ শতাংশ

ডক্টর টিভি ডেস্ক
2023-05-26 12:30:35
প্রথম ৫ মাসেই ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে ৩৬০ শতাংশ

চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ১৩ জন মারা গেছেন

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৪১ ও ঢাকার বাইরে রয়েছেন ১১ জন।

চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জানুয়ারি-মে) ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৬২০ জন। তাদের মধ্যে ১৩ জন মারা গেছেন। অথচ ২০২২ সালের প্রথম পাঁচ মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩৫২ জন এবং তাদের মধ্যে কেউ মারা যাননি।

এ হিসাবে বছরের প্রথম পাঁচ মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে ৩৬০ শতাংশ। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র দেখা গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২০১৯ সাল থেকে নিয়মিত ডেঙ্গুর তথ্য প্রকাশ করে আসছে।

২০২১ সালে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত প্রথম পাঁচ মাসে ১০০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এই সময়ে কেউ ডেঙ্গুতে মারা যাননি। ২০২০ সালের প্রথম পাঁচ মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩০৬ জন এবং ওই বছর একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত কেউ মারা যাননি। ২০১৯ সালের প্রথম পাঁচ মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩২৪ জন এবং মারা গেছেন দুজন।

২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শুধু মে মাসের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে মে মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ১৯৩ জন, ২০২১ সালে ৪৩ জন ও ২০২২ সালে ১৬৩ জন। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৪ বছরের মে মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত কেউ মারা যায়নি। অথচ এ বছর মে মাসেই প্রথম ২৫ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩৪ জন এবং মারা গেছেন দুজন।

কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, ‘এ বছর জানুয়ারি থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ আছে। মে মাসে বৃষ্টি হওয়ায় এডিস মশার ঘনত্ব বেড়েছে। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা ১২ জনের পর্যন্ত রক্ত খেতে পারে। এর ফলে জ্যামিতিক হারে ডেঙ্গু রোগী ছড়ায়। তাই মে মাসে অন্যান্য বছরের তুলনায় রোগী অনেক বেশি।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু এ বছর ডেঙ্গুর মৌসুম অনেক আগেই শুরু হয়েছে, তাই কারও জ্বর হলে অবশ্যই ডেঙ্গু পরীক্ষার পাশাপাশি রোগীকে মশারির ভেতরে রাখতে হবে। কারণ, একজন ডেঙ্গু রোগীকে যদি সাধারণ মশা কামড় দেয়, সেই মশাও তখন ডেঙ্গুর বাহক হয়ে যায়।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ডা. ফজলে শামসুল কবির বলেন, ‘গত বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দেরিতে শুরু হয়েছিল। সেই প্রভাবটিই এখনো চলমান আছে। এ কারণে এ বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে অনেক বেশি রোগী দেখা গেছে। তাছাড়া বৃষ্টিও শুরু হয়ে গেছে। এর একটা প্রভাব তো আছেই। আমার কাছে মনে হয় মূলত দুটি কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। তাহলো—জলবায়ু পরিবর্তন ও দ্রুত নগরায়ন।’

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন হাসপাতালগুলো রোগী বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের আওতাধীন যেসব হাসপাতালে রোগী আছেন, তাদের অধিকাংশই ঢাকার বাইরের। পদ্মা সেতুর কারণে যোগযোগ সহজ হওয়ায় অনেকেই ঢাকায় এসে ভর্তি হচ্ছেন এবং ঢাকার আত্মীয়ের বাসার ঠিকানা দিচ্ছেন হাসপাতালে।’


আরও দেখুন: