স্বাভাবিক প্রসবে অনন্য অর্জন নূরজাহানের
নূরজাহান বেগম, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা নূরজাহান বেগম। ২৯ বছরের চাকরি জীবনে এখন পর্যন্ত ৮ হাজার নরমাল ডেলিভারি সম্পন্ন করেছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, ২০০৪ সাল থেকে টানা ১৯ বছর ধরে নূরজাহান বেগম জেলায় শ্রেষ্ঠ পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকার সম্মাননা পেয়েছেন। সিলেট বিভাগে প্রথম হয়েছেন ৭ বার। ২০১৯ সালে তিনি সারা দেশে প্রথম শুদ্ধাচার পুরস্কার পান। সিলেট বিভাগে এর আগে আর কেউ এ পুরস্কার পায়নি। সূত্র : রাইজিং বিডি।
গত ২৯ বছর ধরে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা হিসেবে চাকরি করছেন নূরজাহান বেগম। এর মধ্যে হবিগঞ্জ সদরের পইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আছেন টানা ২৬ বছর। এর আগে ৩ বছর চাকরি করেছেন নবীগঞ্জ উপজেলার বড় ভাকৈর ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ভিন্ন এলাকা ইউনিয়ন থেকেও গর্ভবতী নারীরা তার কাছে আসেন নরমাল ডেলিভারির জন্য।
নূরজাহান এইচএসসি পর্যন্ত পড়েছেন গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ায়। পরবর্তীতে সিলেট ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার ভিজিটর ট্রেনিং ইনস্টিটিউট থেকে দেড় বছর মেয়াদী কোর্স করেন। ১৯৯৪ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। গত ১ বছরেও তার কেন্দ্রে ৯১৮টি নরমাল ডেলিভারি করেছেন। এর মধ্যে একই সময়ে একসঙ্গে ৩টি করে সন্তান প্রসব করেছেন তিনজন প্রসূতি। প্রতি মাসে কমপক্ষে ২-৩টি যমজ সন্তান প্রসব হয় তার কেন্দ্রে।
নূরজাহান বেগমের কাছে সেবা নিতে আসা শাহেনা বেগম জানান, তার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়েছে পইল ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নরমাল ডেলিভারি হয়েছিল।
শাহেনা বেগম বলেন, আমরা এখানে এসে শান্তি পাই। হাসপাতাল বা প্রাইভেট ক্লিনিকে গেলেই সিজার করাতে হয়। এতে প্রচুর টাকা খরচ হয়। যা আমাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। নূরজাহান আপা আমাদের নরমাল ডেলিভারি করে দেন।
জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মীর সাজেদুর রহমান বলেন, পইল স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে অনুস্বরণ করে আরও বিভিন্ন কেন্দ্রে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকারা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এর একটি ভালো দিক হলো সারা দেশে যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো আছে তার মধ্যে প্রতি মাসে শীর্ষ ১০ এর তালিকা তৈরি করা হয়। সেখানে প্রতি মাসেই হবিগঞ্জের ২-৩টি কেন্দ্র স্থান পায়। এছাড়াও শীর্ষ ৩০ এর তালিকাও হয়। এ তালিকায়ও কমপক্ষে ৫টি থাকে। সারা দেশে ৩০টির মাঝে ৫টি হবিগঞ্জেরই থাকে- এটি আমাদের জন্য অনেক গর্বের।