কোভিড-১৯: সেবাদানকারীরা পেলেন ১৫৫ কোটি টাকা
কোভিড-১৯: সেবাদানকারীরা পেলেন ১৫৫ কোটি টাকা
কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে সরাসরি নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মানী বাবদ এ পর্যন্ত ১৫৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এই সম্মানী পেয়েছেন মোট ২৯ হাজার ৮৯০ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী। শুধু তাই নয়, কোভিড আক্রান্তদের সেবা করতে যেয়ে সেসব স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের (আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ) ব্যক্তিবর্গ মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের ক্ষতি পূরণ বাবদ আরো ৯৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। অর্থ বিভাগের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদানে নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দুই মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ এককালীন বিশেষ সম্মানি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ২০২০ সালে। এই লক্ষ্যে একই বছর ৯ জুলাই অর্থ বিভাগ থেকে একটি পরিপত্রও জারি করা হয়েছিল। এ লক্ষ্যে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সম্মানী বাবদ মোট ৪৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। সম্মানী প্রাপ্তদের মধ্যে চিকিৎসক ছিলেন এক হাজার ১৭৭ জন, নার্স ছয় হাজার ৪৪৭ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ১০০ জন। মোট আট হাজার ৭২৪ জনকে এই অর্থ দেয়া হয়েছিল। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত মোট ২১ হাজার ১৬৬ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ১১০ কোটি ৪১ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এই অর্থের মধ্যে চিকিৎসকের সংখ্যা ছিল সাত হাজার ৬০৬ জন, নার্স দশ হাজার ২৩২ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী তিন হাজার ৩২৮ জন।
এ ছাড়া করোনা রোগীদের সেবা প্রদানে সরাসরি নিয়োজিত সরকারি প্রশাসনের কর্মরতরা মারা গেলে তাদের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭৫০ কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়েছিল। এই তহবিল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে বলে অর্থ বিভাগের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে এই তহবিল থেকে মোট ২৪৫ জনের পরিবারকে অর্থ প্রদান করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থের পরিমাণ ছিল ৯৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবায় সরাসরি নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও অন্য সরকারি কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে ২০২০ সালে ২৩ এপ্রিল একটি পরিপত্র জারি করে অর্থ বিভাগ। পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, করোনার রোগীদের চিকিৎসার সাথে সম্পৃক্ত সরকারি চাকরিজীবী যারা নিজেরা আক্রান্ত হবেন বা মারা যাবেন, তাদের জন্য গ্রেড অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। এর পরিমাণ ৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা। এতে বলা হয়, ১৫ থেকে ২০তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ৫ লাখ ও মারা গেলে ২৫ লাখ, ১০ম থেকে ১৪তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ৭ লাখ ৫০ হাজার এবং মারা গেলে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার; ১ম থেকে ৯ম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ১০ লাখ এবং মারা গেলে ৫০ লাখ টাকা পাবেন।
এর আগে করোনার শুরুর দিকে এই রোগের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সরকারি খরচে হোটেলে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু হোটেলের ভাড়া ও খাবারের অস্বাভাবিক ব্যয় নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর পরবর্তী সময়ে সরকার তাদের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেয়।