রাজশাহীতে হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির অভিযোগ
অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার রয়েল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার থেকে নবজাতক চুরির অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার (১৮ মে) প্রসব বেদনা উঠলে রাজশাহী নগরীর তালাইমারী এলাকার বাসিন্দা তামান্না আখতারকে রয়েল হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্বজনরা। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শে দুপুর ২টার দিকে হাসপাতালে ভর্তি হন।
বিকেল ৩টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) নেওয়া হয়। সেখনে এক ঘণ্টা পার না হতেই রোগীকে বের করা হয়। তবে এ সময় ওই নারীর সঙ্গে কোনো বাচ্চা ছিল না। রোগীর স্বজনরা জানতে চাইলে চিকিৎসকরা জানান, তার পেটে কোনো বাচ্চা নেই।
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, তামান্না আখতারের গর্ভে দুটি সন্তান ছিল। ওটিতে নেওয়ার পর রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়ার (অজ্ঞান করার) ইনজেকশনও দেওয়া হয়। এরপর তিনি বাচ্চা প্রসব করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার সেই বাচ্চা চুরি করেছে।
তামান্না আখতার জানন, ‘আমি ৯ মাস ১২ দিনের অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম। এর আগেও আমি ডাক্তার দেখিয়েছি। আলট্রাসনোগ্রামে দেখা গেছে, আমার গর্ভে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তির পর আমাকে ওটিতে নেওয়ার পর ইনজেকশন দেওয়া হয়। এরপর আর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরলো তখন আমি জানতে পারলাম আমার পেটে নাকি কোনো বাচ্চা ছিল না।
যদি মৃত বাচ্চাও হয় সেটা আমাকে দেওয়া হোক। আমার বেবি যদি না-ই থাকে তাহলে ৯ মাস ১২ দিন আমি কী ক্যারি করলাম বলেও জানান তামান্না আখতার।
তামান্নার শাশুড়ি তাহেরা বিশ্বাস জানান, ওটিতে নেওয়ার পরে আমাদের বলে রোগীর প্রেশার উঠেছে, ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। এখন ঘুমাচ্ছে। প্রেসার কমলে অপারেশন করা হবে। তার কিছুক্ষণ পরই আমার মেয়ে ওটিতে গিয়ে দেখে বউমার পেট নেমে গেছে। বাইরে নিয়ে আসার পর দেখি রক্ত আসছে। কিন্তু কোনো অপারেশন করা হয়নি। এখন আমার বউমার পেট তাহলে কমলো কিসে? আর বাচ্চাটাই বা গেলো কই?
এ বিষয়ে রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজল নন্দী জানান, নবজাতক চুরির মৌখিক একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছি। তদন্তে সত্য বেরিয়ে আসবে।
পুলিশ জানায়, মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। তবে ঘটনার পর থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ম্যানেজার পলাতক।