ড. ফিরদৌসীর স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তি তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণার

ডক্টর টিভি রিপোর্ট :
2023-05-17 16:22:05
ড. ফিরদৌসীর স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তি তরুণদের জন্য অনুপ্রেরণার

আইসিডিডিআরবি-র সাম্যকাওয়া মিলনায়তনে ড. ফিরদৌসী কাদরীর স্বাধীনতা পদক ২০২৩ প্রাপ্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান

সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. ফিরদৌসী কাদরীর স্বাধীনতা পদক ২০২৩ প্রাপ্তি নারী বিজ্ঞানীদের জন্য একটি অনন্য মাইলফলক, যা বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে। 

আজ বুধবার (১৭ মে) মহাখালীতে আইসিডিডিআরবি-র সাম্যকাওয়া মিলনায়তনে ড. ফিরদৌসী কাদরীর স্বাধীনতা পদক ২০২৩ প্রাপ্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন। 

গবেষণা ও প্রশিক্ষণে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য এ পুরস্কার পেয়েছেন আইসিডিডিআরবি-র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. ফিরদৌসী কাদরী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি। পদক পাওয়ায় ড. কাদরীকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ড. কাদরীর কৃতিত্ব উদযাপনের পাশাপাশি বিজ্ঞানের রূপান্তরকারী শক্তি এবং এই ক্ষেত্রে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্বীকৃতি দেওয়ার দিন আজ। বর্তমান সরকার বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করতে এবং প্রতিটি সেক্টরে নারীর ক্ষমতায়নকে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

বিশেষ অতিথি ছিলেন আইসিডিডিআর,বি বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের সদস্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ডাঃ মো, আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। 

উল্লেখ্য, গত ২৩ মার্চ ড. ফিরদৌসী কাদরীর হাতে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৩ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রসঙ্গত: বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে ড. কাদরী বহু পুরস্কার পেয়েছেন যা বিজ্ঞান ও গবেষণার ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানকে প্রতিবলিত করে। তিনি ২০১১ সালে "এশিয়ার নোবেল পুরস্কার হিসেবে খ্যাত মর্যাদাপূর্ণ র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কারে ভূষিত হন। লা’রিয়েল-ইউনেস্কো ফর উইমেন ইন সায়েন্স অ্যাওয়ার্ড – ২০২০ তাঁকে বিজ্ঞানে নারীর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২০ সালে বিল গেটস তাঁকে মহামারি (কলেরা) প্রতিরোধের নায়ক (হিরো) হিসেবে স্বীকৃতি দেন। এসকল সম্মাননা ছাড়াও তিনি আরও অনেক উল্লেখযোগ্য স্বীকৃতি পেয়েছেন- যেমন, ২০১৩ সালে ওয়ার্ল্ড একাডেমি অফ সায়েন্স থেকে প্রফেসর সিএনআররাও প্রাইজ, ক্রিস্টোফার এবং রডলফ ম্যায়াক্স ফাউন্ডেশন পুরস্কার, ২০১২ এবং জীববিজ্ঞানে অসামান্য গবেষণার জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির স্বর্ণপদক, ২০০৬।

আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে এই উদযাপন অনুষ্ঠান শুরু হয়। তারপরে ড. কাদরীর কর্মজীবনের ওপর নির্মিত একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও এবং দীর্ঘকাল ধরে ড. কাদরীর সাথে কাজ করা বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানীদের পাঠানো ভিডিও বার্তা দেখানো হয়।

ড. কাদরীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, এই উদযাপন অনুষ্ঠান শুধু ড. কাদরীর চার দশকেরও বেশি সময় ধরে জীবন রক্ষাকারী কাজের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নয়, বরং বিজ্ঞানে মাধানের অগ্রগামী করার প্রতিশ্রুতির কার মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। তিনি এসময় বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অনাদের স্বাস্থ্য ও অন্যপথে উচ্চ-ম্যানের বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং উদ্ভাবনের প্রতি আাইসিডিডিআর, বির অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

ভিডিও বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের প্রফেসর এডওয়ার্ড টি রায়ান বলেন, “গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তা কাদরীর সাথে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তিনি সত্যিকার অর্থে প্রকৃতির এক শুভ শক্তিতে বলিয়ান। 

ওয়েলকাম সেঙ্গার ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নিকোলাস রবার্ট থমসন এবং আইসিডিডিআর,বি-র বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা গ্রুপের সদস্য তাঁর বার্তায় বলেন, অবহেলিত অনেক রোগের বিষয়ে ড. কাদরী আমাদের সতর্ক করেছেন। তিনি না থাকলে এ রোগগুলো উপেক্ষিত থেকে যেত। 

অভিনন্দনে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ড. কাদরী বলেন, এই ভালোবাসাই তাঁর কাজের চালিকা শক্তি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সহকর্মীরাও ড. কাদরীর সাথে তাদের কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং শুভেচ্ছা জানান। আইসিডিডিআর, বি-র ডিরেক্টর অব ফাইন্যান্স থমাস লিয়াম ব্যারি অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে সরকারি সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধি, মিডিয়া, আইসিডিডিআর,বি-র কর্মী এবং ড, কাদরীর পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। আইসিডিডিআর,বি-এর কর্মীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে উদযাপন শেষ হয়।


আরও দেখুন: