চমেক হাসপাতালে প্রথমবারের মত থেরাপিউটিক প্লাজমা এক্সচেঞ্জ সম্পন্ন
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মত দুরারোগ্য ব্যাধি Guillian Barre Syndrome (GBS) এর রোগীর চিকিৎসায় থেরাপিউটিক প্লাজমা এক্সচেঞ্জ সম্পন্ন
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রথমবারের মত দুরারোগ্য ব্যাধি Guillian Barre Syndrome (GBS) এর রোগীর চিকিৎসায় থেরাপিউটিক প্লাজমা এক্সচেঞ্জ করা হয়েছে। চমেকের চিকিৎসা সেবায় এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে বিশ্বাস সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের।
১০ মে (বুধবার) চমেক হাসপাতালের নিউরোমেডিসিন বিভাগের ভর্তি রোগী অঞ্জনা রানী (৩৮)-র চিকিৎসায় ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের সরাসরি তত্ত্বাবধানে আইসিইউতে এই আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি প্রথমবারের মত ব্যবহার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানান, সারাবিশ্বেই GBS রোগের চিকিৎসায় যে দুটি আধুনিক পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে থেরাপিউটিক প্লাজমা এক্সচেঞ্জ এবং আরেকটি হচ্ছে ইন্ট্রাভেনাস ইমিউনোগ্লোবিউলিন থেরাপি। বেসরকারীভাবে থেরাপিউটিক প্লাজমা এক্সচেঞ্জে প্রায় ৫-৭ লাখ টাকা ব্যয় হয় (৫টা থেরাপী)। চমেক হাসপাতালে এই ৫টি থেরাপি শুধুমাত্র ২৫ হাজার টাকা সরকারী চার্জ এবং আনুষঙ্গিক খরচ মিলে মাত্র ২ লক্ষ টাকায় করা সম্ভব। চমেক হাসপাতাল প্রথমবারের মত এই চিকিৎসা পদ্ধতি শুরু করে চট্টগ্রামের চিকিৎসা সেবায় আরেকটি মাইলফলক অর্জন করলো। এই চিকিৎসা পদ্ধতি চালু করায় অগ্রণী ভুমিকা পালন করে চমেক হাসপাতালের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম আহসান, নিউরোমেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. হাসানুজ্জামান, ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. তানজিলা তাবিব চৌধুরী, এনেস্থিসিয়া এবং আইসিইউ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. হারুন উর রশীদ। আরো ছিলেন- নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. পঞ্চানন দাস, সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলম খন্দকার, সহকারী অধ্যাপক ডা. জামান আহমেদ, রেজিস্ট্রার ডা. পিযুষ মজুমদার; এনেস্থিসিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সৈয়দা নাফিসা খাতুন, জুনিয়র কনসালটেন্ট (ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন) ডা. মো শেখ উল আলম; ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মোহাম্মদ নাফিজ আলম, মেডিকেল অফিসার ডা. মুনাসিব নুর ও ডা. ফাহমিদা মনসুর; আইসিউ এর স্টাফ নার্স রিঙ্কু দাশ এবং ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের ল্যাব টেকনোলজিস্ট মোখলেসুর রহমান।
এ বিষয়ে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. তানজিলা তাবিব চৌধুরী বলেন, এই চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য সকল যন্ত্রপাতি এখন আমাদের আছে। কিটের দাম বেশি হওয়ায় এখন খরচ দুই লক্ষ টাকা লাগছে। সরকারী সহায়তা পেলে খরচ অর্ধেকের নীচে নামিয়ে আনা সম্ভব।
তিনি আরও জানান. বর্তমানে ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় অনেক সমৃদ্ধ এবং বৃহত্তর চট্রগ্রাম এর রোগীদের রক্তের চাহিদা মেটাতে আন্তরিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম আহসান বলেন GBS রোগের এই আধুনিক এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসা পদ্ধতি স্বল্প খরচে চমেক হাসপাতালে শুরু করায় ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগ ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। এই চিকিৎসা পদ্ধতির খরচ যেনো আরো কমিয়ে আনা যায় এই ব্যাপারে আমার সর্বাত্মক সহায়তা থাকবে। সরকারিভাবে যেন কীটের সরবরাহ করা হয়- সে ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।